নবীগঞ্জ শহরতলীর কানাইপুর গ্রামে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে মহিলাসহ অর্ধ শতাধিক লোক আহত হন। এরমধ্যে গুরুতর আহত ৯ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) কানাইপুর শান্তিনগর এলাকায়। এর জের ধরে গতকাল ৩০ এপ্রিল বুধবার সকালে দু’পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মুখোমূখি অবস্থান। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কামাল হোসেন পিপিএম এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল উপস্থিত হয়ে কটোরভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। ফলে বড় ধরনের সংঘর্ষের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে গ্রামবাসী।
এক পর্যায়ে ওসি মো. কামাল হোসেন পিপিএম উভয় পক্ষ, জনপ্রতিনিধি ও এলাকার গণ্যমান্য মুরুব্বীয়ানদের নিয়ে সভা করে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, দাঙ্গা-হাঙ্গামা করে এলাকায় শান্তি আসবে না। শান্তিপূর্ণ অবস্থাই মুক্তির পথ। তিনি স্থানীয় মুরুব্বীয়ানদের মাধ্যমে সামাজিকভাবে বিষয়টি সুরাহা করার জন্য গুরুত্বারোপ করেন। তিনি আরও বলেন, সামাজিকভাবে বিষয়টি সুরাহা না হলে আইনের আশ্রয় নিয়ে তার ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু কোন ধরনের দাঙ্গা হাঙ্গামা বরাদাস্ত করা হবে না। কেউ মারামারিতে লিপ্ত হলে পুলিশ কটোরভাবে ব্যবস্থা গ্রহন করবে।
উল্লেখ্য যে গতকাল উপজেলার সদর ইউনিয়নের কানাইপুর শান্তিনগর এলাকার বাহার মিয়ার ছেলে রুহুল আমীন মঙ্গলবার সকালে একই গ্রামের রুশন মিয়ার ছেলে আলমগীর মিয়ার নিকট বাকী রিক্সাভাড়া বাবদ ৫০ টাকা চাইলে। এতে আলমগীর ভাড়া না দিয়ে রুহুল আমীনের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে উভয় পরিবারের মধ্যে রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্রসহ ইটপাটকেল ব্যবহার করলে স্থানীয় লোকজন সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রনে ব্যর্থ হয়। প্রায় দু’ ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষে উভয় পক্ষে মহিলাসহ অর্ধ শতাধিক লোকজন আহত হয়। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। সংঘর্ষে গুরুতর আহত বাহার মিয়ার ছেলে রুহুল আমীন (২৪), তার স্ত্রী জাহান্নাতুল বেগম (২১), জাহাঙ্গীর মিয়ার স্ত্রী তাহমিনা বেগম(২০), লালা মিয়ার ছেলে উজ্জল মিয়া (৩২), মন্নাফ মিয়ার ছেলে ইকবাল মিয়া (৪৫), রুশন মিয়ার ছেলে সিতন মিয়া (৩৩), বারিক মিয়ার ছেলে উজ্জল মিয়া (৩০), শাহান উল্লার স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৪৫), শাহান উল্লার ছেলে উমর আলী (৬০)কে গুরুতর অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়।
এর জেরধরে বুধবার সকালে উভয় পক্ষ হাকডাক দিয়ে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান নেয়। পরে খবর পেয়ে স্থাণীয় লোকদের সহায়তায় ওসি মো. কামাল হোসেন পিপিএম এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। ওসি এর হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত উভয় পক্ষ ও গ্রামবাসী বড় ধরনের সংঘর্ষ থেকে রক্ষা পেয়েছে।