যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এর অ্যালগরিদম ব্যবহার করে ফ্রান্সের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে ফ্রান্সের প্রসিকিউটর অফিস একটি ফৌজদারি তদন্ত শুরু করেছে। খবর আরটির।
শুক্রবার প্যারিসের প্রধান প্রসিকিউটর লর বেকুয়ো জানান, চলতি বছরের জানুয়ারিতে দায়ের হওয়া দুটি অভিযোগের ভিত্তিতে এ তদন্ত চালানো হচ্ছে। যদিও ইলন মাস্কের নাম সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি, তবে তদন্তে এক্স-এর পরিচালনা ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে—যাদের বিরুদ্ধে বিদেশি হস্তক্ষেপের উদ্দেশ্যে অ্যালগরিদমের অপব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রথম অভিযোগটি দায়ের করেছেন ফরাসি সংসদ সদস্য এরিক বোতেরেল, যিনি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সেন্ট্রিস্ট এন্সেম্বল পার্টির সদস্য।
তিনি অভিযোগ করেন, এক্স প্ল্যাটফর্মে ‘বিভিন্ন মত ও কণ্ঠের পরিসর সংকুচিত’ হওয়ায় এটি একটি ‘ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ’ তৈরি করছে। এছাড়া, তিনি মডারেশন নীতির স্বচ্ছতার অভাব এবং মাস্কের ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপের বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তার মতে, এক্স-এর কর্মকাণ্ড ‘গণতন্ত্রের জন্য হুমকি’।
দ্বিতীয় অভিযোগটি এসেছে সরকারি সাইবার নিরাপত্তা বিভাগের এক কর্মকর্তার পক্ষ থেকে। তিনি দাবি করেন, এক্স-এর অ্যালগরিদমে পরিবর্তনের ফলে বর্ণবাদ ও সমকামবিদ্বেষী কনটেন্ট বেশি প্রচার পাচ্ছে, যা ফ্রান্সের গণতান্ত্রিক বিতর্ককে বিকৃত করছে।
এছাড়া, ফরাসি সোশ্যালিস্ট পার্টির রাজনীতিক থিয়েরি সোথের ও পিয়ের জুভে এক্স-এর মালিকানাধীন চ্যাটবট গ্রোক এর বিরুদ্ধেও আলাদা মামলা দায়ের করেছেন।
তাদের অভিযোগ, গ্রোক সম্প্রতি একাধিক বিদ্বেষমূলক ও আপত্তিকর মন্তব্য করেছে, যার মধ্যে হিটলারকে প্রশংসা করাসহ ইহুদিবিরোধী বক্তব্যও ছিল।
এ বিষয়ে গ্রোক-এর টিম জানায়, তারা ইতোমধ্যে মডেলটি আপডেট করেছে যাতে ঘৃণামূলক ভাষা অপসারণ করা যায়। ইলন মাস্ক নিজেও স্বীকার করেছেন, চ্যাটবটটি ‘অতিরিক্ত অনুগত’ এবং ‘ব্যবহারকারীদের নির্দেশনার প্রতি খুব বেশি সাড়া দেওয়ার প্রবণতা ছিল’, যার ফলে এ বিতর্কিত বক্তব্যগুলো তৈরি হয়েছে।
ইউরোপের রাজনীতিকরা দিন দিন এক্স-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলোর ওপর বেশি নিয়ন্ত্রণ ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, ইলন মাস্ক সম্প্রতি জার্মানির পার্লামেন্ট নির্বাচনের সময় বহুল সমালোচিত ডানপন্থি ও অভিবাসনবিরোধী দল এএফডি-কে প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়ে বিতর্কের জন্ম দেন। ওই নির্বাচনে এএফডি দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে উঠে আসে।