সিলেটের গোয়ানঘাট উপজেলার পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের সীমান্ত এখন চোরচালানের স্বর্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত। সেই রাজ্যর নিয়ন্ত্রক এখন রাজনৈতিক লেবাসধারী বেশ কয়েকজন নেতা।
এদের সকলের পরিচয় পুলিশ কিংবা বিজিবির লাইনম্যান হিসাবে। প্রতিমাসে চোরাচালানের এই লাইনম্যান আবার রদবদল করে সংশ্লিষ্ট থানার ওসি, সার্কেল এসপি, জেলা উত্তর ডিবির নিয়োগ প্রাপ্ত ওসি ও বিজিবির বিভিন্ন ক্যাম্প কামান্ডাররা । যার ফলে রেঞ্জ ডিআইজি, বা জেলার এসপি কোন নির্দেশ বা আদেশ কার্যকর হচ্ছেনা গোয়াইনঘাট থানা এলাকায়। সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মাসিক অপরাধ পর্যালোচনায় সভায় এসব সীমান্তের চোরাচালান বন্ধ করতে জেলার এসপিদের কঠিন নির্দেশনা দিয়ে ছিলেন। কিন্তু কোন নির্দেশনাই আমলে নেয়নি গোয়াইনঘাট থানার ওসি সরকার তোফায়েল ও সার্কেল সাহিদুল ইসলাম।
তবে চোরাচালান বন্ধের বদলে পাল্টেছে চোরাচালান সচল রাখবার নিত্য নতুন কৌশল। আগে প্রতি মাসে সীমান্তেরঘাট অলিখিত ইজারা দেওয়া হতো মাসিক ৮/১০ লাখ টাকার বিনিময়ে। কিন্তু এখন চলছে কমিশনের খেলা। গতকাল সরেজমিনে গোয়াইনঘাট এলাকায় গেলে নতুন করে উঠে আসে চোরাচালান নতুন নিয়ন্ত্রকদের নাম। এরা বেশীর ভাগই রাজনৈতিক লেবাসদারী। আগে যেসব চোরাচালানের লাইন নিয়ন্ত্রণ করত স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগের নেতারা। গত ৫ আগষ্টের পরে এসব লাইন নিয়ন্ত্রন করছেন যুবলীগের, শ্রমিদলের কতিপয় কিছু পাতি নেতা। যদিও চোরাচালানের অভিযোগে উপজেলার পূর্বজাফলং সীমান্তের চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করেন সামছুল ও আব্দুল্লাহ। তার বাহিনীতে আছেন রহমত,সবুজসহ বেশ কয়েকজন।
সামছুল গ্রুপের সদস্যরা স্থানীয় থানার ওসি ও এসআই জহুর লালের এর নামে চোরাচালানের টাকা উত্তোলন করেন। এরা প্রতিবস্তা চিনি থেকে ৩ শত টাকা চাঁদা নেয়। এর মধ্যে ২শত টাকা প্রশাসনের জন্য বরাদ্ধ আর ১শত টাকা সামছুলের। এরকম প্রতিদিন কয়েক হাজার বস্তা চিনি সীমান্ত দিয়ে বাংলদেশে প্রবেশ করছে। প্রতিকার্টুন কিট ৫শত টাকা, কসমেটিক্স প্রতি কার্টুন ১ হাজার টাকা করে নিচ্ছে সামছুল ও তার গ্রুপের সদস্যরা। পূর্ব জাফলং সীমান্তে জিরো পয়েন্ট, সিড়িঘাট পর্যন্ত সামছুল একক নিয়ন্ত্রনে চলে চোরাচালান। এসব স্পটে বিজিবির লাইনম্যান হিসাবে টাকা আাদায় করেন অন্য গ্রুপ।
সামছুল স্পষ্ট বক্তব্য পুলিশের বর্তমান লাইনে সাথে আমি জড়িত নই, কে বা কারা আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। তবে লাইন আমার কাছে আসলে আপনাদের সাথে যোগাযোগ করব।
আব্দুল্লাহ বলেন,আমি লাইনম্যান আব্দুলাহ নয়,লাইনম্যান আব্দুলাহ আমরা একই গ্রামের ,আমার যেকোন বিষয়ে আমি আব্দুল্লাহর সাথে যোগাযোগ করি । তবে স্থানীয় সূত্রে জানা যায় তিনিই লাইনম্যান আব্দুল্লাহ।
এবিষয়ে জানতে এসআই জহুর লাল সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অস্বীকার করে বলেন ,বিষয়টি নিশ্চিত নয়। চোরাকারবারীরা মিথ্যা কথা বলেছে।
এলাকা বাসীর প্রশ্ন হলো এসআই জহুর লাল এত কঠোর অবস্থানে থাকলে ওপেন ভারতীয় চিনি কিট কসমেটিক সহ বিভিন্ন ধরনের পন্য সামগ্রী বাংলাদেশ প্রবেশ করতেছে কি ভাবে।
তবে স্থানীয় এক সাংবাদিক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন থানা লাইন এভাবেই চলে। পুলিশ বিজিবি ছাড়া চোরাচালান কীভাবে হবে?
এবিষয়ে জানতে চাইলে গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমদ সরকার বলেন,আমি সামসুল ও আব্দুল্লাহকে চিনি না।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সার্কেল সাহিদুল ইসলামকে মুটোফোনে একাদিকবার কল দেওয়া হলে ও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।