শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ক্লাস নিয়ে একাধিক সমস্যার কারণে পড়াশোনায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে দুই ক্লাসের মাঝে দীর্ঘ বিরতি শিক্ষার্থীদের সময় ও মনোযোগ নষ্ট করছে। অন্যদিকে, কিছু শিক্ষক দিনের পর দিন ক্লাস নেন না এবং টার্ম টেস্ট বা উপস্থিতির মার্কস যথাযথভাবে দেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। তারা সম্পূর্ণ ক্লাস নেওয়ার মর্মে রিপোর্ট পরীক্ষা দপ্তরে জমা দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, প্রায়ই সকাল বেলায় একটি ক্লাস এবং বিকেলে অন্যটি থাকায় অনেক শিক্ষার্থী পুরো দিন ক্যাম্পাসে অপেক্ষায় কাটাচ্ছেন। বিশেষ করে যারা দূর থেকে আসেন, তাদের জন্য এটি বড় ধরনের অসুবিধা সৃষ্টি করছে। দীর্ঘ বিরতির কারণে ক্লাসের ধারাবাহিকতা ভেঙে পড়ায়, পড়াশোনায় মন বসানো কঠিন হয়ে পড়ে। অনেক সময় এই বিরতির কারণে মানসিক চাপ ও ক্লান্তিও বেড়ে যায়। দিনের অধিকাংশ সময় অপেক্ষায় কাটানোর কারণে ব্যক্তিগত ও একাডেমিক পরিকল্পনাও ব্যাহত হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যায়ের বিভিন্ন বিভাগের অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, প্রায়ই একটি ক্লাস থেকে আরেকটি ক্লাসের বিরতি তিন-চার ঘন্টা হয়ে থাকে। এটা আমাদের মারাত্মক ভোগান্তিতে ফেলে। আবার অনেক সময় তিন-চার ঘন্টা অপেক্ষা করে শেষ সময় এসে স্যার জানান ক্লাস ক্যান্সেল।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘অনেক শিক্ষক আছে নিয়মিত ক্লাস নেন না। আমাদের কি সময়ের মূল্য নেই? প্রশাসনের এ বিষয়ে শিগগিরই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।’
এ বিষয়ে সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘দিনের পর দিন অনেকেই ক্লাস নেন না, ফাইনাল পরীক্ষার আগে টার্ম টেস্ট এটেনডেন্স এর নম্বর দেন না, ৫ থেকে ৭ টি ক্লাস নিয়ে ৩০ থেকে ৩২ টি ক্লাস নিয়েছেন বলে পরীক্ষা দপ্তরে রিপোর্ট জমা দেন। তাদের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও প্রশাসন জানা সত্ত্বেও কোনো পদক্ষেপ নেয় না। আবার আরেক দল শিক্ষক রেগুলার ক্লাস নিয়ে কষ্ট করে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গকে অনেকবার অবহিত করেছি। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ছাত্ররা যখন এই সমস্ত শিক্ষকদের কারণে সব শিক্ষকদের গালি দেয় তখন বড় কষ্ট লাগে ‘
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাজেদুল করিম বলেন, এই অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়গুলো নিখুঁতভাবে দেখার দায়িত্ব প্রথমত বিভাগীয় প্রধানের, এরপর ডিনদের। এই বিষয়গুলো যদি তারা না দেখে এবং শিক্ষার্থীরা যদি লিখিত আকারে অভিযোগ দেয়, তাহলে সেটা একাডেমিক কাউন্সিলে যাবে। রুটিন এমনভাবে করা উচিত যাতে সকালে একটি এবং বিকালে আরেকটি ক্লাস না হয়।