শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫
শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
আন্তর্জাতিক

কিম জং উনের বিরুদ্ধে চালানো চাঞ্চল্যকর ড্রোন মিশন ফাঁস

দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে এবার গুরুতর এক অভিযোগ উঠেছে। আর এটি নিয়ে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগে জানা গেছে, প্রেসিডেন্ট ইউন সোক ইয়ল গত বছর ইচ্ছকৃতভাবে উত্তর কোরিয়ায় ড্রোন অভিযান চালিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনকে উসকে দিতে চেয়েছিলেন। কারণ এমনটি হলে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার অজুহাতে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ায় জরুরি সমরিক শাসন চাপিয়ে দিতে পারতেন।

এমনই স্পর্শকাতর বিভিন্ন তথ্য সম্প্রতি একজন দক্ষিণ কোরিয় উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তার ফোন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আর সেটি নিয়েই এখন নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে দেশটির রাজনীতির মঞ্চে। নোটগুলো দেখে স্পষ্টই মনে হয়েছে, ইউন সোক ইচ্ছকৃতভাবে উত্তর কোরিয়াকে চাপে ফেলতে চেয়েছিলেন। প্রসিকিউটররা বলছেন, ওই নোটে একটি অস্থির পরিবেশ সৃষ্টির স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। সংবাদ মাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে পুরো ঘটনাটি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

উত্তর কোরিয়া গত অক্টোবরেই দাবি করেছিল, দক্ষিণ কোরিয়ার ড্রোন রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের আকাশে ঢুকে তাদের প্রচারপত্র ফেলেছে। তখন অনেকেই বিষয়টিকে খুব একটা গুরুত্ব না দিলেও, এবার ফাঁস হওয়া তথ্যে বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া গেছে। উত্তর কোরিয়ার গণমাধ্যমেও ওই সময়ে একটি ড্রোনের ছবি প্রকাশ করা হয়েছিল, যেগুলো দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক ড্রোনের মতো দেখতে বলেই বিশ্লেষকরা মন্তব্য করেছিলেন।

এদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ার বর্তমান ক্ষমতাসীন দল বলছে, ড্রোন অভিযানের পেছনে যদি সত্যিই উসকানি দেওয়ার উদ্দেশ্য থেকে থাকে, তাহলে সেটা ছিল রাষ্ট্রের নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলার মতো একটি অপরিণামদর্শী আচরণ। প্রসিকিউটররা আরও নিশ্চিত করেন, নোটে উত্তর কোরিয়ার পিয়ংইয়ং, দেশটির ২টি পরমাণু স্থাপনা এবং কিম জং উনের ব্যক্তিগত অবকাশযাপন কেন্দ্রের নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল। যদি ড্রোন থেকে সত্যি সত্যিই এসব স্থাপনায় কোনো ধরনের হামলা চালানো হতো তবে দুই কোরিয়ার মধ্যে যুদ্ধ বেঁধে যাওয়া কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা ছিল না।

এর মাঝেই উঠে এসেছে গত বছরের সেই রাতের কথা, যে রাতে ইউন সামরিক শাসন জারি করেছিলেন। সেনারা সংসদ ভবনে ঢোকার চেষ্টা করলে ব্যাপারটি কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পরে দেশটির সংসদ সদস্যরা একজোট হয়ে সব বাধা অতিক্রম করেন এবং ভোটাভুটির মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ইউন সোক ইয়লের আদেশ বাতিল করেন। পরে সেই দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার করা হয়, যা গণমাধ্যমের কল্যাণে ছড়িয়ে পড়ে পুরো দুনিয়ায়।

ওই ঘটনার পরপর প্রেসিডেন্ট ইউন ও তার সাবেক দুই প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাকে আইনের আওতায় আনা হয়। বর্তমানে বিভিন্ন অভিযোগে তারা দেশটিতে বিচারাধীন রয়েছেন। যদিও প্রেসিডেন্ট ইউন সোক বারবার তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। কিন্তু তদন্তে খুঁটিনাটি প্রকাশ পাওয়ার পর থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে এবার অস্থিরতার বাতাস বইতে শুরু করেছে।

এই সম্পর্কিত আরো