দীর্ঘ অপেক্ষার প্রহর গুনে অবশেষে বৃহস্পতিবার রাতেই বাণিজ্যিক পরিচালনে যুক্ত হল দেশের বৃহত্তম বেসরকারি যাত্রীবাহী নৌযান ‘এমভি এম খান-৭’। এর আগে ২৯ মার্চ নৌযানটি পরীক্ষামূলক বাণিজ্যিক পরিচালনে একটি ট্রিপে যাত্রী পরিবহন করলেও কিছু কারিগরি ত্রুটির কারণে এর ৩০ মার্চেও পরে এর যাত্রা বাতিল করা হয়। পরবর্তীতে ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলী সমন্বয়ে একটি কারিগরি টিম নৌযানটির হাল, সুকান ও প্রপালশন ইউনিট পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা শেষে নৌযানটির বাণিজ্যিক পরিচালনে চূড়ান্ত অনুমোদন প্রদান করেছে।
ফলে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টায় ‘এমভি এম খান-৭’ বরিশাল থেকে যাত্রা শুরু করছে। প্রায় সোয়া ৩শফুট দৈর্ঘ্য ও ৭০ ফুট প্রস্থ নৌযানটি বরিশালের নিজস্ব ডকইয়ার্ডে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হয়েছে। আমেরিকান ‘ক্যটারপীলার’ ব্রান্ডের আড়াই হাজার অশ্বশক্তির দুটি মূল ইঞ্জিন সমৃদ্ধ নৌযানটিতে ৪টি জেনারেটর সংযুক্ত করা হয়েছে। যান একটি স্ট্যান্ডবাই হিসাবে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে।
‘এমভি এম খান-৭ যাত্রী ধারণ ক্ষমতা প্রায় দেড় হাজার। বিলাসবহুল এ নৌযানটিতে বিশাল ডেক শ্রেণি ছাড়াও মোট ১৭১টি বাতানুকুল কক্ষ রয়েছে। যারমধ্যে ৯১টি একক শয্যার, ৫১টি দ্বৈত শয্যার এবং ৯টি ফ্যামিলি কেবিন ছাড়াও ৮টি ভিআইপি কেবিন রয়েছে। এসব কেবিনের মধ্যেও একক, দ্বৈতশয্যা ছাড়াও স্যুট রয়েছে।
ইলেক্ট্রো-হাইড্রোলিক পরিচালন পদ্ধতির নৌযানটি লোয়ার ও আপার ডেকে যাত্রী ধারন ক্ষমতা প্রায় এক হাজার। ইতোমধ্যে বরিশালের কির্তনখোলা ও ঝালকাঠীর সুগন্ধ নদীতে নৌযানটির চূড়ান্ত ট্রায়াল ট্রিপ সম্পন্নের পরে নৌ পরিবহন অধিদপ্তর থেকে ফিটনেস ও সাময়িক চলাচল অনুমতি প্রদানের পরে বিঅইডব্লিউটিএ থেকে তার সময়সূচিও প্রদান করা হয়েছে। নৌযানটি প্রাথমিকভাবে ঢাকা ও বরিশাল প্রান্ত থেকে রাত সোয়া ৯টায় গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে এম খান শিপিং লাইন্স-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহফুজ খান ইনকিলাবকে জানান, চূড়ান্ত কারিগরি পরীক্ষণ শেষে নৌযানটি যাত্রী বহনে যুক্ত হচ্ছে। তিনি জানান, আমরা নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের পরিপূর্ণ গাইড লাইন অনুসরণ করে সর্বাধুনিক ও টেকসই প্রযুক্তিতে নৌযানটি তৈরি করেছি। নৌযান ও যাত্রীদের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত অগ্নি নির্বাপণ সরঞ্জাম ও লাইফবয় সহ সব ধরনের নিরাপত্তা সরঞ্জাম নৌযানটিতে সংযোজনের কথা জানিয়ে মাহফুজ খান এমভি এম খান-৭’এ ভ্রমণ করে যাত্রীরা পরিপূর্ণ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।