মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
সিলেট বিভাগ

জামালগঞ্জে চারা সংকটে আমন আবাদ ব্যাহত, চিন্তিত কৃষক

আর মাত্র কয়েকদিন আমন আবাদের সময় শেষ হয়ে যাবে। জামালগঞ্জে চারা সংকটের কারণে অনেক জমিতে চারা রোপন করা হবে না বলে জানান কৃষকের। কিছু কিছু জায়গায় চারা পেলেও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। অতিরিক্ত বৃষ্টি ও খড়ার কারণে অনেক বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে চারা সংকট দেখা দিয়েছে। এতে আমন উৎপাদন কম হবে বলে আশংকা করছে কৃষকেরা। 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে কৃষি কর্মকর্তা জানান, চলতি মৌসুমে ৪৮৯০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ্য পূরণে কৃষি প্রণোদনার আওতায় ৭৫০ জন কৃষককে ৫ কেজি বীজ ও ২০ কেজি বিভিন্ন রকম সার দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো জনান, অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বীজ বুনেও আশানুরূপ চারা পায়নি। যার কারণে অন্যান্য উপজেলা থেকে চারা সংগ্রহ করতে হচ্ছে। 

সম্প্রতি বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় আমন চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। ভরা বৃষ্টিতেও তারা আমন রোপনে ব্যস্ত রয়েছেন। এলাকার বিভিন্ন কৃষকের সাথে আলাপ করে জানা যায়, সাধারণত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ১ কেজি ধানের চারা ২শত থেকে ৩শত টাকায় বিক্রি হয়। কিন্তু এবার ৫শত থেকে ৬শত টাকায় ধানের চারা কিনতে হচ্ছে। তার উপর নৌকা বা গাড়ি বাড়াতো আছেই। উপজেলার লালপুর গ্রামের কৃষক হাসেম মিয়া জানান, তিনি ৪ বিঘা জমি আমন চাষের জন্য তৈরি করেছেন। প্রথমে ১০ কেজি ধানের বীজতলা তৈরি করেছিলেন। কিন্তু অতি বৃষ্টিতে তা নষ্ট হয়ে যায়। পরে আবার ৫ কেজি ধানের বীজতলা তৈরি করেছেন। কিন্তু তার পরও চারা সংকট পড়েছে। 

গতকাল সোমবার আরো ৫কেজি ধানের চারা ধর্মপাশা থেকে নৌকা দিয়ে আনতে হয়েছে। এতে খরচ হয়েছে সাড়ে চার হাজার টাকা। এতকিছুর পরও পুরো জমিতে আমন লাগাতে পারবেন কিনা শঙ্কায় রয়েছেন। কৃষক সবুর মিয়া বলেন, তিনি ২০ কেজি ধানের বীজ বুনে ছিলেন। অতি বৃষ্টির কারণে বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়। তিনি আর বীজ বোপন করেন নাই। তাই এখন বেশি দামে চারা ক্রয় করে জমিতে রোপন করছেন। 

তিনি আরো জানান, অতি বৃষ্টির কারণে আমার মতো অনেকের বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়। যারা উঁচু জায়গায় বীজতলা করেছে তাদের চারাই ভাল রয়েছে। কৃষক ইয়াছিন মিয়া বলেন, ৩ বিঘা জমি আবাদের জন্য ২শতাংশ জমিতে বীজতলা করেছিলাম। তার প্রায় ৫০ ভাগ চারা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন চারা সংগ্রহ করতে গিয়ে দেখেন ১ কেজি বীজের চারা ৯শত টাকা। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন কুমার সাহা বলেন, জামালগঞ্জ হাওর বেষ্টিত এলাকা হওয়ায় উঁচু জায়গার পরিমাণ অপ্রতুল। যার কারণে কৃষকেরা নদীর পাড় অথবা নিম্ন স্থানে বীজতলা করে থাকেন। কিছু কিছু বীজতলা অতি বৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার কারণে অনেকেই পার্শ্ববর্তী উপজেলা থেকে ধানের চারা সংগ্রহ করে রোপন করছেন। আমাদের সাথে কোন কৃষক চারা সংকটের জন্য যোগাযোগ করলে আমাদের সুনামগঞ্জ বীনা উপকেন্দ্রে আপদকালীন বীজতলা রয়েছে, সেখান থেকে বিনামূল্যে চারা সংগ্রহ করার সুযোগ রয়েছে।

এই সম্পর্কিত আরো