সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
সিলেট বিভাগ

সিলেট থেকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হলো আরও ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস

সিলেট গ্যাস ফিল্ড থেকে জাতীয় গ্রিডে প্রতিদিন যুক্ত হচ্ছে আরও ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। সিলেট গ্যাস ফিল্ডের আওতাধিন রশিদপুর গ্যাস ফিল্ডের ৩ নম্বর পুরোনো কূপ থেকে নতুন করে দৈনিক ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে রশিদপুরে সম্প্রতি পাওয়া গ্যাসফিল্ড থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়। এর আগে থেকেই সিলেটের ১৪টি কূপ থেকে প্রতিদিন প্রায় ১০৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে।

সম্প্রতি হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার রশিদপুরের ৩ নম্বর কুপ সংস্কার করে নতুন করে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়।

এনিয়ে গত দুই বছরে সিলেটের ছয়টি কূপে গ্যাসের সন্ধান মিলেছে। দেশে গ্যাস সংকটের এই সময়ে যাকে বিশেষ সম্ভাবনা হিসেবে দেখছেন সংশ্লিস্টরা।

রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্স প্রায় ৭৩ কোটি টাকা ব্যয়ে দুই মাস আগে কূপটিতে ওয়ার্কওভার কার্যক্রম শুরু করে। সফলভাবে কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর এখন থেকে এ কূপ থেকে দীর্ঘ ১০ বছর গ্যাস উত্তোলন সম্ভব হবে বলে আশা করছে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড।

সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) প্রকৌশলী মো. আব্দুল জলিল প্রামানিক জানান, কূপটিতে প্রায় ২৫ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের মজুদ রয়েছে। আগামী ১০ বছর এই কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন সম্ভব হবে। বর্তমানে প্রতি ঘনমিটার এলএনজির দাম ৬৫ টাকা হিসাবে উত্তোলিত গ্যাসের আর্থিক মূল্য দাঁড়াবে প্রায় ৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।

এদিকে বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক জানান, ‘কূপটিতে গ্যাসের চাপ ভালো রয়েছে। ভবিষ্যতেও উৎপাদন বাড়াতে এ ধরনের কার্যক্রম চলমান থাকবে। বাপেক্সের কার্যক্রম আরও জোরদার করতে নতুন জনবল নিয়োগের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে রশিদপুর গ্যাস ফিল্ডের ১১টি কূপের মধ্যে সাতটি থেকে প্রতিদিন গড়ে ৬২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে।’

এরআগে গত বছরের ২২ অক্টোবর সিলেট গ্যাস ফিল্ডের ৭নং কূপে খননকাজ শেষে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। হরিপুরে ৭ নং কূপ থেকে দৈনিক ৭ থেকে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পরীক্ষামূলকভাবে উত্তোলন হচ্ছে। কূপের ১ হাজার ২০০ মিটার গভীরতায় এ গ্যাস পাওয়া গেছে।

এর আগে ওই বছরের ২৪ মে খননকাজ শেষে সিলেটের কৈলাশটিলা গ্যাস ক্ষেত্রের ৮নং কূপে দৈনিক ২১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার যায়। কূপের ৩ হাজার ৪৪০ থেকে ৫৫ হাজার ফুট গভীরতায় গ্যাস পাওয়া যায়।

এসজিএফল সূত্রে জানা যায়, প্রাকৃতিক সম্পদের সমৃদ্ধ আধার হিসেবে পরিচিত সিলেটে গত বছর থেকেই কূপ অনুসন্ধান ও খননের কাজ চলমান রেখেছে সিলেট গ্যাসফিল্ড কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, সিলেট গ্যাসফিল্ড লিমিটেযের আওতাধিন কূপগুলোতে চলমান আরও কয়েকটি প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ হবে। খনন চলমান থাকা অন্য সকল ক’পে আশানুরূপ গ্যাস পাওয়া গেলে শুধুমাত্র এই কোম্পানি থেকে প্রতিদিন জাতীয় গ্রিডে ২৫০ মিলিয়ন গ্যাস যুক্ত করা সম্ভব বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

এরআগে গতবছরের ২৭ জানুয়ারি সিলেট গ্যাসফিল্ডের আওতাধীন রশিদপুরের ২ নং কূপে গ্যাসের নতুন স্তরের সন্ধান মেলে। যার পরিমাণ প্রায় ১৫৭ বিলিয়ন ঘনফুট।

তারও আগে ২০২৩ সালের ২৬ নভেম্বর দেশের সবচেয়ে পুরানো গ্যাসক্ষেত্র হরিপুরের ১০ নম্বর কূপে গ্যাসের সন্ধান মেলে। খনন কাজ শেষে ওইদিন গ্যাস প্রাপ্তির তথ্য নিশ্চিত করে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড (এসজিএফএল)।
আর ওই বছরের ২২ নভেম্বর সিলেটের কৈলাশটিলায় পরিত্যক্ত ২ নং কুপ থেকে গ্যাস জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়। এখান থেকে দৈনিক ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে।

সিলেটের হরিপুরে প্রথম গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায় ১৯৫৫ সালে। এরপর আবিষ্কার হতে থাকে একের পর এক গ্যাসক্ষেত্র। বর্তমানে এসজিএফএল-এর আওতায় পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে। সেগুলো হলো- হরিপুর গ্যাসফিল্ড, রশীদপুর গ্যাসফিল্ড, ছাতক গ্যাসফিল্ড, কৈলাশটিলা গ্যাসফিল্ড ও বিয়ানীবাজার গ্যাসফিল্ড। এর মধ্যে ছাতক গ্যাসফিল্ড পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। বাকিগুলোর মধ্যে ১৪টি কূপ থেকে বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ১০৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে।

২০২২ সালে সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের (এসজিএফএল) আওতাধীন সিলেট-৮, কৈলাশটিলা-৭ ও বিয়ানীবাজার-১ নামে তিনটি পরিত্যক্ত কূপ পুনঃখনন করা হয়। এসব কূপ থেকে দৈনিক ১৬ থেকে ১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ করা হচ্ছে।

এই সম্পর্কিত আরো