সিলেট মহানগর পুলিশের উদ্যোগে আবাসিক হোটেল মালিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় এসএমপি’র পুলিশ লাইন্স হলরুমে নবনিযুক্ত পুলিশ কমিশনার আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় হোটেল মালিকরা তাদের নানা সমস্যা ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। পুলিশ কমিশনার আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরী তাদের বক্তব্য শোনেন এবং উত্থাপিত সব সমস্যার সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন।
পুলিশ কমিশনার বলেন, সিলেটে আগত পর্যটক ও বর্ডারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার জরুরি। এজন্য তিনি একটি আধুনিক মোবাইল অ্যাপস ব্যবহারের পরামর্শ দেন, যেখানে পর্যটকরা আগাম রেজিস্ট্রেশন করে সহজেই হোটেল বুকিং করতে পারবেন। এতে শুধু হয়রানিমুক্ত সেবা পাওয়া যাবে না, বরং তারা নিরাপত্তা নেটওয়ার্কের আওতায়ও আসবেন।
তিনি বলেন, সিলেটে আগত পর্যটকরা প্রায়ই গাড়ি ভাড়া, চুরি ও ছিনতাইয়ের মতো সমস্যার মুখোমুখি হন। হোটেল মালিকরা যদি অতিথিদের ভ্রমণ পরিকল্পনায় সহায়তা করেন, তাহলে নিরাপত্তা বাড়বে এবং একই সঙ্গে হোটেল ব্যবসাও সমৃদ্ধ হবে। এ সময় তিনি "জিনিয়া অ্যাপস"-এর কার্যকারিতা তুলে ধরে বলেন, নগরবাসী যেকোনো বিপদের সময় এই অ্যাপসের মাধ্যমে এক ক্লিকেই পুলিশের সাহায্য চাইতে পারবেন।
সভায় হোটেল মালিকদের উদ্দেশ্যে পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, প্রতিটি হোটেলের রিসেপশন ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কার্যকর সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। অতিথিদের সঠিক পরিচয় যাচাই করে রুম বরাদ্দ দিতে হবে—এনআইডি বা জন্মনিবন্ধন যাচাই বাধ্যতামূলক। পরিচয়পত্র না থাকলে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সাপেক্ষে রুম বরাদ্দের পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়া প্রতিটি হোটেলে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র স্থাপন ও নিয়মিত মেয়াদ পরীক্ষা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেন।
তিনি কঠোরভাবে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সিলেট মহানগরের কিছু হোটেলে অনৈতিক ও অসামাজিক কর্মকাণ্ড চলছে, যা যুবসমাজকে বিপথে নিচ্ছে এবং শহরের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। এসব কর্মকাণ্ড দমনে পুলিশ প্রশাসন নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে। সামান্য লাভের আশায় অপরাধীদের আশ্রয় না দিয়ে আইন মেনে হোটেল পরিচালনা করলে শহরের পরিবেশ সুন্দর থাকবে এবং ব্যবসাও লাভজনক হবে।
আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরী বলেন, “আমরা সকলের সহযোগিতায় সিলেটকে একটি নিরাপদ ও সুন্দর শহর হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছি। নিরাপদ ও সুন্দর শহর গড়তে হোটেল মালিকসহ সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।”
মতবিনিময় সভায় সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং সিলেটের আবাসিক হোটেল মালিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।