বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
সিলেট বিভাগ

ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কবলে সিলেট

টানা কয়েক দিনের তীব্র গরমের পর বৃষ্টিপাত হলেও কমেনি গরমের তীব্রতা। এরমধ্যে হঠাৎ করেই ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েছে সিলেট। চাহিদা বৃদ্ধির বিপরীতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদামতো বিদ্যুৎ না পাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে শিগগিরই এর উন্নতির সম্ভাবনা নেই বলেও জানান সিলেটের বিদ্যুৎ বিভাগ সংশ্লিষ্টরা।


সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সিলেট অঞ্চলে বিদ্যুতের ২৪৩ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ মিলছে ১৫৬ মেগাওয়াট। ফলে ঘাটতি ছিল ৮৭ মেগাওয়াট এবং লোডশেডিং হয়েছে ৩৬ শতাংশ।

এদিকে মঙ্গলবার সিলেট জেলায় ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ মিলছে ৯০ মেগাওয়াট। জেলায় বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে ৬০ মেগাওয়াট। ফলে লোডশেডিং হয়েছে ৪০ শতাংশের বেশি।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেট বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল কাদির জানান, ‘গরম বাড়ায় চাহিদা বেড়েছে। চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বাড়েনি, ফলে সরবরাহ কম থাকায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তাই লোডশেডিং করতে হচ্ছে। আপাতত এ অবস্থার উন্নতির সম্ভাবনা নেই। কারণ জাতীয়ভাবে উৎপাদন না বাড়লে লোডশেডিং কমার সম্ভাবনা নেই। তবে শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটি হওয়ায় চাহিদা কমবে। এতে লোডশেডিংয়ের পরিমাণও কমবে।’

এদিকে গত দু’দিন থেকে লোডশেডিং বেড়ে যাওয়ায় গরমে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। লোডশেডিংয়ের মাত্রা চরম পর্যায়ে পৌঁছায় ঘরে-বাইরে কোথাও মিলছে না একটু স্বস্তি। দিনের বেলায় ১ ঘণ্টা পর পর থাকছে না বিদ্যুৎ। এমনকি রাতেও একাধিকবার লোডশেডিং হচ্ছে।

গরমের তীব্রতা ও লোডশেডিংয়ে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে বয়স্ক, শিশু ও অসুস্থরা পড়েছেন বিপাকে। তীব্র গরমে অতিরিক্ত ঘেমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন তাদের অনেকেই। অফিস-আদালতে কাজে নেমে এসেছে স্থবিরতা। একইসাথে ব্যবসা-বাণিজ্যে দেখা দিয়েছে মন্দাভাব।

এদিকে এ অবস্থা থেকে উত্তরণের তেমন আশার বাণী শুনাতে পারেনি বিদ্যুৎ বিভাগ। বৃষ্টিতে আবহাওয়া শীতল হলে চাহিদা ও লোডশেডিংয়ের মাত্রা কমবে।

বিদ্যুৎ বিভাগ বলেছে, গরমে চাহিদা বেড়েছে কিন্তু সেই আলোকে উৎপাদন বাড়েনি। তাই সরবরাহ কম থাকায় লোডশেডিং বেড়েছে। শহরে লোডশেডিং ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ হলেও উপজেলা পর্যায়ে এ পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ। গ্রামীণ এলাকায় গড়ে ৬-৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ মিলছে না।

সিলেট বিভাগের বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন। উপজেলা পর্যায়ে প্রতিদিন কমপক্ষে সাত থেকে আট ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর লোডশেডিং বেশি হয়। শহর থেকে গ্রাম, সবখানে ভয়াবহ লোডশেডিং। গ্রামে রাত-দিন সমানতালে চলে এ লোডশেডিং।

এদিকে শহরের বিভিন্ন এলাকাগুলো পিডিবির অধীনে থাকায় অনেকটা রুটিন করে লোডশেডিং করা হয়। তবে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের অধীনে থাকা গ্রামীণ জনপদের মানুষকে কঠিন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গ্রামে ২৪ ঘণ্টার বেশিরভাগ সময় বিদ্যুৎহীন থাকে না বলে অভিযোগ করেন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দারা। গত রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) থেকে লোডশেডিংয়ের মাত্রা আরো বেড়ে গেছে বলেও জানিয়েছেন গ্রামের লোকজন।

এই সম্পর্কিত আরো