বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
সিলেট বিভাগ

শোকের মাতম

নবীগঞ্জে বোনের বিয়ের ঠিক করতে গিয়ে তিন শিশুর সলিল সমাধি

বিয়ে বাড়িতে তিন শিশুর মৃত্যু নিয়ে চলছে শোকের মাত্তম। বোনের বিয়ের সাইথ খাইতে গিয়ে তিন শিশুর মর্মান্তিক সলিল সমাধি হয়েছে। ‘আমার ঘর খালি করে চলে গেছে সোনার ছেলেরা, তারারে তোমরা আইন্না দেও’ এভাবে নবীগঞ্জ হাসপাতালের মাটিতে বিলাপ করছিলেন জগাই সরকার । “কারে নিয়া গাইতাম আমার মেয়ের বিয়া গো আল্লা” গতকাল অর্না সরকারে বিয়ে ঠিক করার জন্য গ্রামের বাড়িতে যান। এসময় তার পরিবারে তিনটি শিশু গতকাল পানিতে ডুবে সলিল সমাধি হয়েছে। হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্ত্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষনা করেন। এসময় তিনি মাটিতে পরে বিলাপ করছিলেন।

জানাযায়, হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে পানিতে ডুবে তিনটি শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা সবাই চাচাতো-ফুফাতো ভাইবোন। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের পাঞ্জারাই গ্রামে এ ঘটনা সংঘটিত হয়।


নিহতদের পরিবার সুত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুরে জগাই সরকারের বাড়িতে তার মেয়ে অর্ন সরকারে বিয়ে কথা বার্তা চলছিল। এসময় বাড়ির আঙ্গিনায় শিশুরা তিনজনে মিলে খেলা করছিল, এসময় পরিবারে সবার চোখের আড়ালে তিনটি শিশু বাড়ির পুকুরে পড়ে যায়।  প্রথমে পাঞ্জারাই গ্রামের রতীশ সরকারের ছেলে শ্রাবন সরকার (৩) পানিতে পড়ে যায়, তাকে বাঁচাতে খেলার সাথী অপর দুইজন চাচাতো ভাই জগাই সরকারের ছেলে শুভ সরকার (৪) এবং ফুফাতো বোন নোয়াগাঁও গ্রামের ব্রজলাল সরকারের মেয়ে অহনা সরকার (৫) তারাও পানিতে ডুবে মারা যায়।

বিয়ে বাড়ির ঝামেলা থাকায় প্রথমে কেউ বুঝতে পারেননি, শিশুরা কখন পানিতে পড়েছে । পরে দুপুর দেড়টার দিকে বিয়ে বাড়িতে আসা গ্রামের এক মহিলা পানিতে ভাসতে থাকা অহনাকে দেখতে পান। এরপর খোঁজাখুঁজি করে পুকুরে থেকে শ্রাবন, শুভ ও অহনার তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহতরা হলেন- পাঞ্জারাই গ্রামের রতীশ সরকারের ছেলে শ্রাবন সরকার (৩), জগাই সরকারের ছেলে শুভ সরকার (৪) এবং নোয়াগাঁও গ্রামের ব্রজলাল সরকারের মেয়ে অহনা সরকার (৫)। শ্রাবন ও শুভ চাচাতো ভাই, আর অহনা তাদের ফুফাতো বোন। তারা নবীগঞ্জ পৌর এলাকার জয়নগরে বসবাস করত। পাঞ্জারাই গ্রামে বেড়াতে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে এ দুর্ঘটনার শিকার হয়।


শিশুদের উদ্ধার করে তাদের দ্রুত নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকেই মৃত ঘোষণা করেন। 

হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শিশুদের নিথর দেহ একসাথে রাখা হয়েছে। স্বজনদের আহাজারীতে হাসপাতাল প্রাঙ্গণ ভারী হয়ে উঠেছে। শোকে পাথর হয়ে গেছেন নিহত শিশুদের পিতা-মাতারা। এ সময় হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখতে ভীড় করেন স্থানীয় শত শত মানুষ।

নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. চম্পক কিশোর সাহা সুমন বলেন, ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন তাদেরকে হাসাপাতালে নিয়ে আসার পুর্বেই মৃত হয়েছে।

খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানার এসআই আনিসুর রহমান হাসপাতাল ও ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে লাশের সুরতহাল করেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নবীগঞ্জ লাশ হাসপাতালে রয়েছে।


এব্যাপারে নবীগঞ্জ থানা ওসি শেখ কামরুজ্জামান বলেন, আমরা লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করছি।

এই সম্পর্কিত আরো