বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
সিলেট বিভাগ

কুশিয়ারা নদীতে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন ড্রেজারের শব্দে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার সীমান্তবর্তী কুশিয়ারা নদী থেকে অবৈধ ভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। যদিও কুশিয়ারা নদীর ওসমানীনগর অংশে বালু উত্তোলনের সরকারি কোন নির্দেশনা নেই। সরকারি নির্দেশ অমান্য করে ওসমানীনগর উপজেলার অংশ থেকে বালু উত্তোলনের অভিযোগে দীর্ঘদিনের। এসব বালু উত্তোলনে ব্যবহার হয় বিশাল আকারের ড্রেজার মেশিন। আর এসব মেশিনের শব্দ দূষণে অতিষ্ঠ করে তুলেছে নদী তীরবর্তী স্থানীয়দের। 

অভিযোগ রয়েছে, প্রভাবশালী আব্দুল জুনায়েদসহ বেশ কয়েকজন প্রভাব খাটিয়ে কুশিয়ারা নদীর ব্রিজের নিচ থেকে বালু উত্তোলন করেছেন অবৈধ ভাবে। ফলে শব্দ দূষণে অতিষ্ঠ স্থানীয়রা ও বালু উত্তোলনে হুমকির মধ্যে রয়েছে কুশিয়ারা নদীর ব্রিজ। এই বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহনে আব্দুল জুনায়েদকে অভিযুক্ত করে এলাকাবাসীর পক্ষে গত ৭ সেপ্টেম্বর ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। ওই দিনই অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহনে স্থানীয় সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে দ্বায়িত্ব দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন। 

অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকে কুশিয়ারা নদীর উপর নির্মিত শেরপুর ব্রিজ সংলগ্ন স্থান থেকে বিশাল জনবল ব্যবহার করে অবৈধ ভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন আব্দুল জুনায়েদ। দিন ও রাতে একই স্থানে বালু উত্তোলন ও আনলোডে বিশাল আকারের ড্রেজার মেশিন ব্যবহার করছেন। ফলে ড্রেজারের শব্দ দূষণে অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা। শিক্ষার্থীদের পড়া লেখায় ক্ষতি ও নির্ঘুম রাত কটাতে হচ্ছে তাদের। এছাড়া অসুস্থ ও বৃদ্ধ মানুষের নানা শারিরিক সমস্যার তৈরী হচ্ছে বলে অভিযোগে উল্যেখ করা হয়। কুশিয়ারা নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে নদীর তীর ও একাধিক গ্রামের রাস্তায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ব্রিজের নিচে বল্ক থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করায় সিলেট—ঢাকা মহাসড়কের যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ ব্রিজটি অত্যান্ত ঝুকিপূর্ণ রয়েছে। যে কোন সময় বল্কসহ ব্রিজের বড় ধরণের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। নদীর তীরবর্তী একাধিক রাস্তা ভেঙ্গে নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে, হুমকিতে রয়েছে নতুন বস্তি গ্রাম। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের শেরপুর ব্রিজসহ একাধিক মসজিদ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অবৈধ বালু পরিবহন করায় নতুন বস্তি, বিদ্যালয় ও কলেজ শিক্ষার্থীদের সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

এদিকে, ড্রেজার মেশিনের পাইপ দিয়ে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের পশ্চিম পার্শে আইলেন্ট সৃষ্টি করায় সব সময় পানি জমাট থাকে। পনি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় ছোট-বড় যানবাহনসহ স্থানীয়দের যাতায়েতে নানা ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগে উল্যেখ করা হয়।  

এই বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত আব্দুল জুনায়েদের সাথে চেষ্টা করেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। তবে, আব্দুল জুনায়েদের ড্রেজার মেশিনে কুশিয়ারা নদীর শেরপুর ব্রিজের অংশ থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়টি মোবাইল ফোনে স্বীকার করেছেন মুনু মিয়া নামের একজন স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী। ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের আইনী নিদের্শনা রয়েছি কি না? জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন।

ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা জয়নাল আবেদীন লিখিত অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এই বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহনে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়াম্যানকে দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছে। অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করলে প্রশাসন ব্যবস্থ নেবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কুশিয়ারা নদীতে তদারকি অব্যাহত রয়েছে।

এই সম্পর্কিত আরো