নবীগঞ্জে উপজেলার মধ্যে বিএনপির কোন্দল চরম আকার ধারন করেছে। এক পক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে মিছিল পাল্টা মিছিল করছে। এনিয়ে যে কোন মুহুর্তে দলীয় সংঘাতের আশংকা রয়েছে নেতাকর্মীদের মধ্যে। উপজেলা বিএনপির নতুন কমিটি গঠন নিয়ে সম্প্রতি একটি পক্ষ প্রতিবাদে শহরে একাধিক ঝাড়ু মিছিল করেছে।
একদিকে নব নির্বাচিত কমিটির সভাপতি সৈয়দ মতিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মজিদুর রহমানের নেতৃত্বে সুপার ফাইভের ৫জন।
অপর দিকে রয়েছেন সাবেক সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক শিহাব আহমদ চৌধুরী, সাবেক ছাত্রদল নেতা হারুনুর রশিদ, নুরুল গনি চৌধুরী সোহেল ও সোহেল আহমদ চৌধুরী রিপন অনুসারীরা।
অপর দিকে নবীগঞ্জ পৌর বিএনপির একটি ওয়ার্ড কমিটি গঠন নিয়ে কর্মীদের হাতাহাতি হয়। পৌর বিএনপির দুটি গ্রুপ আলাদা মিছিল মিটিং করছে। একদিকে সাবেক সভাপতি সদ্য দলী সকল পদ থেকে অব্যাহতি প্রাপ্ত সাবেক মেয়র ছাবির আহমদ চৌধুরী ও বর্তমান আহবায়ক ছালিক মিয়া চৌধুরী।
অপর দিকে বর্তমান তিন যুন্ম আহবায়ক তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী, নুরুল আমিন ও অরবিন্দু রায় তারা পাল্টাপাল্টি কর্মসুচী পালন করছেন। গতকাল বুধবার নতুন আরেকটি বলয় মিছিল ও র্যারি করে সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সুিজাত মিয়ার নেতৃত্বে। ফলে দলীয় কোন্দল দিন দিন বড় আকার ধারন করছে।
বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নবীগঞ্জে পৃথকভাবে তিনটি গ্রুপের তিনটি বিশাল বর্ণাঢ্য র্যালি ও পথসভা নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে টানটান উত্তেজনার করছে। বুধবার (৩রা সেপ্টেম্বর) পৃথক ভাবে নবীগঞ্জ উপজেলা ও পৌর বিএনপির গ্রুপ গুলোর পৃথক র্যালি ও পথসভা গুলো করেন।
এসময় তিন গ্রুপের মিছিল ও র্যালি প্রধান প্রধান সড়ক পদক্ষিন করে পৃথক পৃথক স্থানে গিয়ে শেষ হয়। এসময় শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পুলিশ ও যৌথবাহিনী তাদের টহল জোরদার করেন।
বুধবার বিকাল ৪ টায় প্রথম র্যালী বাহির করেন দলীয় সকল পদ থেকে অব্যাহতি প্রাপ্ত পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক মেয়র আলহাজ্ব ছাবির আহমেদ চৌধুরী ও পৌর বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক ছালিক মিয়ার নেতৃত্বে জেলা পরিষদের ডাকবাংলো প্রাঙ্গন থেকে বিভিন্ন ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে বিশাল র্যালী বের হয়।
এর ৩০ মিনিট পরে বিকাল সাড়ে ৪ ঘটিকায় নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির নব নির্বাচিত কমিটির নেতৃত্বে এবং পৌর বিএনপির অপর যুন্ম আহবায়কদের সম্বনয় নেতৃত্বে নবীগঞ্জ সরকারী জে কে হাইস্কুল প্রাঙ্গন থেকে বিশাল বর্ণাঢ্য শুভাযাত্রা ও র্যালী বাইহর করা হয়। এই র্যালি অগ্রভাগে ছিল লাটি খেলার দল। প্রায় কয়েক হাজার নেতাকর্মী উক্ত র্যালীতে অংশ নেন। এরপরে উপজেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ মতিউর রহমান পিয়ারার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মজিদুর রহমানের পরিচালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাবেক আহ্বায়ক সরফরাজ চৌধুরী, সিনিয়র সহ-সভাপতি বয়েত উল্লা, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অলিউর রহমান অলি, সাংগঠনিক সম্পাদক সাহিদ তালুকদার, পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী ও নুরুল আমিন প্রমূখ।
বিকাল সাড়ে ৫ টায় শহরের গোল্ডেন প্লাজাস্থ দলীয় কার্যালয় থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালী বের করেন সাবেক এমপি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য শেখ সুজাত মিয়ার নেতৃত্বে তার অনুসারীরা। তারা শহর প্রদক্ষিন করে নতুন বাজার মোড়ে পথ সভা করেন। বক্তব্য রাখেন,সাবেক সিনিয়র যুন্ম আহবায়ক শিহাব আহমদ চৌধুরী, ছাদিকুর রহমান শিশু, সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মোক্তাদির চৌধুরী,সাবেক ছাত্রদল নেতা হারুনুর রশিদ, নুরুল গনি চৌধুরী সোহেল,সোহেল আহমদ চৌধুরী রিপন, শাহেদুল ইসলাম চৌধুরী রিপন অনুসারীরা।
দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নবীগঞ্জ উপজেলা ও পৌর বিএনপি পৃথক ভাবে ৩টি গ্রুপে র্যালী বের করা নিয়ে নেতাকর্মীদের উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এছাড়াও রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার ঝড় উঠে।
নবীগঞ্জ কলেজের একজন অধ্যাপক নাম প্রকাশ না করে বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় গ্রুপি লবিং এবং প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর পৃথকভাবে ৩টি বর্ণাঢ্য র্যালী শুভ লক্ষন নয়। এতে এসব গ্রুপিং থেকে বড় ধরনের ধাঙ্গা হওয়ার সম্ভাবনা বেশী।
দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি প্রাপ্ত সাবেক পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র ছাবির আহমদ চৌধুরী বলেন, আমি দলের একজন কর্মী হিসাবে দলীয় কর্মসুচী পালন করছি। আমার সাথে পৌর বিএনপির আহবায়ক সহ অনেক নেতা কর্মী রয়েছেন। দল যদি আমার কর্ম তৎপরতা দেখে স্থগিত আদেশ প্রত্যাহার করেন কোন সমস্যা নেই। আমি বিগত ১৭ বছর দলের কর্মসুচী পালন করেছি । আমি এখনও আগের মতো দলীয় পদ না থাকলেও কর্মসুচী পালন করে যাচ্ছি। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমাদের কর্মসুচী আগেও আলাদা পালন করেছি, এখন আমরা আলাদা বলয়ে পালন করছি।
সাবেক সিনিয়র যুন্ম আহবায়ক শিহাব আহমদ চৌধুরী বলেন, আমরা আলাদা মিছিল মিটিং করার কারন হচ্ছে, দলীয় অনেক ত্যাগী নেতাকর্মীকে উপজেলা পুনাঙ্গ কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তাই আমরা নির্বিিচত কমিটির সাথে নেই। তাই নেতাকর্মীদের মধ্যে পুনাঙ্গ কমিটি গঠন নিয়ে চরম উত্তেজনা আছে, পুনাঙ্গ কমিটি সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত আমরা আলাদা কর্মসুচী পালন করবো।
নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক মজিদুর রহমান মজিদ বলেন,আমরা আমাদের দলীয় কর্মসুচী নির্বাচিত কমিটির মাধ্যমে আমরা পালন করেছি। কেউ যদি দলের বাহিরে থেকে আলাদা কর্মসুচী পালন করে সেটা তার ব্যাপার। আমাদের দলের মধ্যে এনিয়ে কোন উত্তেজনা নেই। যারা বিছিন্ন ভাবে ক্ষুদ্ধ হয়ে কর্মসুচী করছেন তাদেরকে বলবো আমাদের সবাই একদলের লোক তারা যেন বৈধ কমিটির সাথে থেকে দলীয় কর্মসুচী পালন করেন সেটাই প্রত্যাশা করছি।
সাবেক এমপি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ সুজাত মিয়ার সাথে মোবাইলে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল রিসিভ করেন তার পিএস সাদী, তিনি বলেন, এমপি কোন বিষয়ে বক্তব্য দিবেন বিষয়টি বলুন, তখন তাকে দলীয় কোন্দল সম্পর্কে বললে তিনি বক্তব্য দিতে রাজি হননি।