সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে দুইটি ব্রিজের এপ্রোচ সড়কের দুইপাশে বড় বড় গর্ত ও ১২ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে খানাখন্দ ও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা সদর ইউনিয়নের নয়াহালট-চানপুর ব্রিজ আন্যটি লক্ষীপুর মসজিদের পাশে বক্স কালভার্টের দুই পাশে এপ্রোচ সড়কে খানাখন্দ ও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় প্রায় যানবাহন বিকল হয়ে পড়ছে। যেকোন সময় হতে পারে বড় ধরণের দূর্ঘটনা। যার কারণে যান চলাচলে বিঘ্ন সহ দুর্ভোগের স্বীকার হচ্ছে গাড়ি চালক ও হাজার হাজার পথচারী। গাড়ি চালক ও পথচারীগণ জামালগঞ্জ-সেলিমগঞ্জ ১২ কিলোমিটার রাস্তা দ্রুত মেরামতের দাবি জানিয়েছেন।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় নয়াহালট-চানপুর ব্রিজের দুইপাশের এপ্রোচে বিশাল গর্ত তৈরি হয়েছে। এছাড়াও ব্রিজের উপর খানাখন্দ হয়ে জড়জড়িত হয়ে আছে। যার কারণে যানবাহন ব্রিজে উঠতে গেলে যানবাহন হেলেদুলে যায়। যেকোন সময় বড় ধরণের দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবণায় দ্রুত ব্রিজ সহ রাস্তাটি সংস্কারে দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর দাবি দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ এই ব্রিজের দুইপাশে এপ্রোচে বিরাট বিরাট গর্ত সহ ১২ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে খানাখন্দের জড়জড়িত হয়ে পড়েছে রাস্তাটি।
কোন প্রকার সংস্কার কাজ না করায় মরণ ফাদে পরিণত হয়েছে রাস্তাটি। তাই বড় ধরণের দূর্ঘটনা রোধে দ্রুত ব্রিজের এপ্রোচ সহ রাস্তাটি সংস্কার করা জরুরি হয়ে পড়েছে। চানপুর গ্রামের বাসিন্দা জহিরুল হক বলেন, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এই ব্রিজের দুইপাশে গর্ত সহ খানাখন্দ রয়েছে। প্রশাসনের লোকজন এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করলেও তাদের চোখে পড়ে না।
এছাড়াও হারুন মার্কেটের দুইপাশের রাস্তাটি খানাখন্দে ভরা। প্রতিদিনই ছোট-বড় দূর্ঘটনা ঘটছে। আমরা বার বার প্রশাসনকে জানালে তারা মাঝে মাঝে অল্প অল্প করে সংস্কার করলেও আবার কয়েকদিন পর খানাখন্দে ভরে যায়। আমরা দ্রুত এই রাস্তাটি স্থায়ীভাবে সংস্কার করার দাবি জানাই। মন্নানঘাট বাজারের ব্যবসায়ী মোঃ ইয়ার আলী বলেন, সেলিমগঞ্জ-জামালগঞ্জ এই রাস্তাটি ৩ উপজেলার যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা। ধর্মপাশা, মধ্যনগর এবং নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুড়ির লোকজন সুনামগঞ্জের সাথে শিক্ষা, চিকিৎসা ও ব্যবসায়ীক কাজে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা এটি। এই রাস্তা দিয়ে বিভিন্ন দপ্তরের প্রশাসন সহ বয়স্ক, রোগী সিলেট - সুনামগঞ্জ যেতে স্পিডবোট, নৌকা, মোটরসাইকেলে মন্নানঘাট হয়ে জামালগঞ্জ, সুনামগঞ্জ ও সিলেট যেতে হয়।
বিগত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর রাস্তাটি আর সংস্কার করা হয়নি। তাই সমস্ত রাস্তায় এখন খানাখন্দে ভরা। অটোরিকশা, সিএনজি কিংবা মোটরসাইকেলে উঠলে শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নষ্ট হয়ে যায়। রোগী কিংবা বয়স্করা এই রাস্তায় মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে জেলা- উপজেলা সদরের হাসপাতালে যেতে হয়। তাই ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি দ্রুত রাস্তাটি সংস্কার করার জন্য নতুবা যেকোন সময় ফুঁসে উঠতে পারে জনগণ। অটোরিকশা চালক শামিম মিয়া জানান, আমরা জামালগঞ্জ - সেলিমগঞ্জ রাস্তায় অটো চালাতে গিয়ে সারা রাস্তায় খানাখন্দের কারণে ঝাঁকুনি খেয়ে যাত্রীরা গালি দিয়ে বলেন, এই এলাকায় এমন দুর্ভোগ দেখার কেউ নাই। দুইটি ব্রিজের দুইপাশে বড় গর্ত থাকায় ব্রিজে উঠতে অটোরিকশা হেলেদুলে যায়। মাঝে মাঝে পড়ে যেতে চায়। অনেক সময় যাত্রীরা নেমে ধাক্কা দিয়ে ব্রিজে গাড়ি উঠাতে হয়। খানাখন্দের কারণে প্রতিদিনই গাড়ি মেরামত করতে হয়। তাই যে টাকা আয় হয় তার বেশির ভাগই গাড়ি মেরামত করতে খরচ হয়ে যায়।
উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ ছানোয়ার হোসেন জানান, জামালগঞ্জ - সেলিমগঞ্জ ১২ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রাক্কলন পাঠালে ঢাকা থেকে প্রকল্প পরিচালক মোঃ জাকারিয়া স্যার এসে সরজমিনে তদন্ত করে প্রাক্কলন অনুমোদন করেন। চলতি সেপ্টেম্বর মাসে ১২ থেকে ১৮ তারিখের মধ্যে টেন্ডার আহ্বানের নির্দেশ প্রদান করেন। আশা করছি আগামী মাস থেকে এই রাস্তার কাজ শুরু হবে।