বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নবীগঞ্জে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় পৃথক পৃথকভাবে তিনটি গ্রুপের তিনটি বিশাল বর্ণাঢ্য র্যালি টানটান উত্তেজনার মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৩রা সেপ্টেম্বর) পৃথক ভাবে নবীগঞ্জ উপজেলা ও পৌর বিএনপির গ্রুপ গুলোর বর্ণাঢ্য র্যালি গুলো শহরের প্রধান প্রধান সড়ক পদক্ষিন করে পৃথক পৃথক স্থানে গিয়ে শেষ হয়। এসময় শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পুলিশ ও যৌথবাহিনী তাদের টহল জোরদার করেন।
বুধবার বিকাল ৪ টায় দলীয় সকল পদ থেকে অব্যাহতি প্রাপ্ত পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক মেয়র আলহাজ্ব ছাবির আহমেদ চৌধুরী ও পৌর বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক ছালিক মিয়ার নেতৃত্বে জেলা পরিষদের ডাকবাংলো প্রাঙ্গন থেকে বিভিন্ন ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে বিশাল র্যালী বের হয়। বাদ্য যন্ত্রের তালে তালে নেতাকর্মীদের উৎসব মুখোর পরিবেশে শহর প্রদক্ষিন করে।
বিকাল সাড়ে ৪ ঘটিকায় নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির নব নির্বাচিত কমিটির নেতৃত্বে এবং পৌর বিএনপির একাংশের নেতৃবৃন্দের নেতৃত্বে নবীগঞ্জ সরকারী জে কে হাইস্কুল প্রাঙ্গন থেকে বিশাল বর্ণাঢ্য শুভা যাত্রা ও র্যালী বের করা হয়। এতে মুল আর্কষন ছিল লাটি খেলা। প্রায় কয়েক হাজার নেতাকর্মী উক্ত র্যালীতে অংশ নেন। এর আগে উপজেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ মতিউর রহমান পিয়ারার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মজিদুর রহমানের পরিচালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাবেক আহ্বায়ক সরফরাজ চৌধুরী, সিনিয়র সহ-সভাপতি বয়েত উল্লা, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অলিউর রহমান অলি, সাংগঠনিক সম্পাদক সাহিদ তালুকদার ও পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী প্রমূখ।
বিকাল ৫ টায় শহরের গোল্ডেন প্লাজাস্থ দলীয় কার্যালয় থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালী বের করেন সাবেক এমপি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য শেখ সুজাত মিয়ার নেতৃত্বে তার অনুসারীরা। তারা শহর প্রদক্ষিন করে নতুন বাজার মোড়ে পথ সভা করেন।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নবীগঞ্জ উপজেলা ও পৌর বিএনপি পৃথক ভাবে ৩টি গ্রুপে র্যালী বের করা নিয়ে যেমন নেতাকর্মীদের উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
এছাড়াও রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার ঝড় উঠেছে। এক সময়ে সদ্য পদপদবী হারা নেতা ছাবির আহমদ চৌধুরী এবং সাবেক এমপি শেখ সুজাত মিয়া একই বলয়ে ছিলেন। অপর দিকে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ায় বহিস্কৃত নেতা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মুজিবুর রহমান শেফু ও সরফরাজ চৌধুরীসহ পৌর বিএনপির একাংশ নিয়ে নেতৃত্ব দেন। মুজিবুর রহমান শেফু বহিস্কার হলে সরফরাজ চৌধুরীর নেতৃত্বেই তাদের গ্রুপ পরিচালিত হয়। বিগত উপজেলা বিএনপির কাউন্সিলে সাবেক এমপি শেখ সুজাত মিয়ার পুরো প্যাণেল পরাজিত হয়। এর কিছু দিন পরই চাঁদাবাজি ও অবৈধ বালু উত্তোলনসহ নানা অভিযোগের ভিত্তিতে সাবেক পৌর বিএনপির সভাপতি ও বর্তমান সদস্য ছাবির আহমদ চৌধুরীর দলীয় সকল পর্যায়ের পদ স্থগিত করেন কেন্দ্রীয় বিএনপি। ফলে ছাবির আহমদ চৌধুরী শেখ সুজাত মিয়া বলয় থেকে বেড়িয়ে আসেন।
নবীগঞ্জ কলেজের একজন অধ্যাপক নাম প্রকাশ না করে বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় গ্রুপি লবিং এবং প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর পৃথকভাবে ৩টি বর্ণাঢ্য র্যালী শুভ লক্ষন নয়। এতে এসব গ্রুপিং থেকে বড় ধরনের ধাঙ্গা হওয়ার সম্ভাবনা বেশী।