স্ত্রীর দায়ের করা যৌতুক মামলায় খালাস পান স্বামী মো. আব্দুস শুকুর। যৌতুক নিরোধ আইনের মামলার রায়ে অসন্তোস হয়ে আদালত চত্বরে স্বামীর উপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালান মামলার বাদী মোছা. নুরজাহান বেগম।
হামলায় আহতরা হলেন, সিলেট নগরীর ঘাসিটুলা এলাকার মৃত মো. বাবু মিয়ার ছেলে জামাল উদ্দিন (৫৭) ও বিশ্বনাথ উপজেলার সোনাপুর এলাকার আব্দুল খালেকের ছেলে সাদিকুর রহমান (২৯)।
ঘটনাটি মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে সিলেট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনে ঘটে।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মোছা. নুরজাহান বেগম ও তার ছোট ভাই মনজাম মিয়াকে (২৮) আটক করে।
জানা গেছে, বিশ্বনাথ থানার সিআর মামলা নং ৪৯৭/২০২৩ ইং, যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারায় দায়ের করা মামলার একমাত্র আসামি সিলেটের ওসমানীনগর থানার মোবারকপুর এলাকার আব্দুর রউফের ছেলে মো. আব্দুস শুকুর (৪০)-কে চিফ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩য় আদালত সিলেটের বিচারক আব্দুল্লাহ আল নোমান খালাস প্রদান করেন। আদালতের রায়ে অসন্তুষ্ট হয়ে বাদিনী সিলেটের বিশ্বনাথ থানার ধলিপাড়া শেখপাড়া এলাকার মৃত মো: মন্তাজ আলীর মেয়ে মোছা. নুরজাহান বেগম (৩৮) আদালত ভবনের ৬ষ্ঠ তলা থেকে দৌড়ে ৩য় তলায় পৌঁছে আসামিপক্ষের ওপর হামলা চালান। এসময় তিনি আসামিপক্ষের লোকজনদের উপর চাকু ও হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করতে থাকলে আসামিপক্ষের লোকজন রক্তাক্ত জখম হন। পরে তারা দৌড়ে অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এজলাসে আশ্রয় নিয়ে আত্মরক্ষা করেন। তাৎক্ষণিকভাবে আদালতে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য এবং বিজ্ঞ কৌশলীরা দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে হামলাকারী বাদিনী মোছা. নুরজাহান বেগম ও তার আপন ছোট ভাই মনজাম মিয়াকে (২৮) আটক করেন। তাদের কাছ থেকে একটি চাকু, একটি হাতুড়ি এবং একটি সেলাই রেঞ্জ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আহত জামাল উদ্দিন ও সাদিকুর রহমানকে উদ্ধার করে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ ঘটনার পর আদালত ভবনে কিছু সময়ের জন্য উত্তেজনা ছড়ালেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনার বিষয়ে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক বলেন, ‘আজ দুপুরে আদালত প্রাঙ্গনে যৌতুক নিরোধ আইনের মামলার রায়ে খালাস পাওয়া আসামির উপর ক্ষুব্ধ হয়ে মামলার বাদিনী আদালত প্রাঙ্গণে আসামি পক্ষের ওপর হামলা করেন। এ ঘটনায় আসামীপক্ষের দুইজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এবং দুইজনকে আটক করে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ দায়ের করেন নি, অভিযোগ পেলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’