বানিয়াচংয়ে নাইন মার্ডার মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন বানিয়াচং থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন। বুধবার পুলিশের রংপুর রেঞ্জ অফিসে পরিদর্শক পদে কর্মস্থল থেকে রংপুর জেলা ডিবি তাকে গ্রেফতার করে।
নাইন মার্ডার মামলার সাবেক তদন্তকারী কর্মকর্তা, বানিয়াচং থানার সাবেক পরিদর্শক (তদন্ত)মো. আবু হানিফ বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় এ তথ্য জানান।
ওসি দেলোয়ারকে গ্রেফতারের পরে সেখান থেকে তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত ওসি দেলোয়ার বানিয়াচং থানায় কর্মরত ছিলেন।
৫ আগষ্ট কারফিউ ভেঙ্গে সকাল থেকেই ঘর থেকে বেরিয়ে দলে দলে এল আর সরকারী উচ্ছ বিদ্যালয়ের মাঠে জড়ো হতে থাকেন ছাত্র-জনতা।সকাল ১০ টার মধ্যেই সাগর দিঘীর পাড়ে জড়ো হন হাজার হাজার মানুষ।১১ টায় বড় বাজার শহীদ মিনার অভিমুখে যাত্রা করে ফ্যাসিবাদ বিরোধী গনমিছিল।বড় বাজার চৌরাস্তার মোড়ে পথ সভার মাধ্যমে মিছিলের সমাপ্তি ঘোষনা করা হয়।লাখো জনতার মিছিলের একাংশ উপজেলা হয়ে যাত্রা করে থানা অভিমুখে।মিছিল উপজেলার সামনে যাওয়া মাত্রই মিছিলকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের অস্ত্রধারী ক্যাডাররা।এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আন্দোলনকারীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।হাজার হাজার জনতার মিছিল ছুঁটে থানা ঘেরাও করতে।স্থানীয় শাহী ঈদগাহের সামনে পৌছামাত্র ই মিছিলকারীদের উপর বৃষ্টির মতো গুলি ছুড়তে থাকে স্বশস্ত্র ছাত্রলীগ,যুবলীগের ক্যাডার ও পুলিশ বাহিনী।ছাত্র-জনতা প্রতিরোধ গড়ে তুললে পিছু হটে ছাত্রলীগ,যুবলীগ ও পুলিশ বাহিনী অবস্থান নেয় থানার সামনে।চারদিক থেকে এলোপাতাড়ি গুলিতে ঘটনাস্থল থানার সামনে নিহত হন মো:হাসাইন সহ সাতজন।বুলেটবিদ্ধ অবস্থায় আনাছ ও আকিনুর সিলেট ওসমানী হাসপাতালে মৃত্যু বরন করেন।গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন শতাধিক।তাৎক্ষনিক হাজার হাজার বিক্ষুদ্ধ জনতা ঘেরাও করে রাখে বানিয়াচং থানা।খবর পেয়ে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী থানার সামনে অবস্থান নেয়।ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে কয়েক হাজার ক্ষুদ্ধ জনতাকে শান্ত করে বারো ঘন্টা পর রাত ২টায় অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে সেনাবাহিনী।ঐ রাতে ই বিক্ষুদ্ধ জনতার গনপিটুনিতে এস আই সন্তোস চৌধুরী নিহত হন।
এ ঘটনায় শহীদ নয়জনের পরিবারের পক্ষ থেকে মো: ছানু মিয়া বাদী হয়ে ১৫৯ জনকে আসামী করে ও এসআই সন্তোষ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের পক্ষে কয়েক হাজার অজ্ঞাত আসামী করে আলাদা দুটি মামলা করা হয়। পরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরো একটি অভিযোগ দায়ের হয়। ট্রাইবুনালে ইতোমধ্যে ৩০ জনের বেশি লোক সাক্ষ্য দিয়েছেন।