সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ৬নং ফতেপুর ইউনিয়নের বিন্নাকান্দী এলাকায় কাপনা নদীর অংশ (বিন্নাকান্দী হাওর) থেকে অবৈধভাবে বালু লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের স্থানীয় দুই নেতার নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট এই কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে রোববার (২১ ডিসেম্বর) সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বিন্নাকান্দী এলাকার ভুক্তভোগী জিয়াউল ইসলাম। এছাড়া গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বরাবরও পৃথক অভিযোগ দাখিল করেছেন স্থানীয়রা।
অভিযুক্তরা হলেন—গোয়াইনঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুর রহমান চৌধুরী এবং উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুক আহমদ। সিন্ডিকেটের অন্য সদস্যরা হলেন জহির উদ্দিন, সাইদ মিয়া, সাব্বির আহমদ, মনির উদ্দিন, আলতা ও আলতাফ হোসেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর ১৭ নভেম্বর থেকে এই চক্রটি লাগাতার কাপনা নদীর চোট গাঙ থেকে বালু লুটপাট করে আসছে। যে এলাকা থেকে বালু তোলা হচ্ছে, সেখানে স্থানীয় কৃষকরা বোরো ফসল চাষ করেন। অবাধে বালু উত্তোলনের ফলে ওই এলাকার ফসলি জমি এখন বিলুপ্তির পথে।
স্থানীয় কৃষকদের দাবি, এই জমির ওপর গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক মানুষ নির্ভরশীল। বালু উত্তোলনে বাধা দিলে আমিনুর রহমান ও মাসুক আহমদের বাহিনী সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও ত্রাস সৃষ্টি করছে। ফলে চাষাবাদের জমি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার শঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন গ্রামবাসী। এছাড়া এই অবৈধ কাজে কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তার সহযোগিতার অভিযোগও তুলেছেন স্থানীয়রা।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আমিনুর রহমান চৌধুরী বালু উত্তোলনের বিষয়টি অস্বীকার করেন। অন্যদিকে, ফতেপুর বিটের ইনচার্জ রুবেল দাশ পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, বালু লুটপাটের বিষয়ে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করছি। পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোও গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখা হবে।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী জানান, বালু লুটপাটের লিখিত অভিযোগ আমরা পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে বালু খেকো চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।