মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদীর ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিরক্ষা বাঁধে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে জিও ব্যাগ স্থাপনের কাজ চলছে। এর পাশেই রহিমপুর ইউনিয়নের মৃত্তিঙ্গা স্টিল ব্রিজের পার্শ্ববর্তী স্থানে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। ফলে নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ও দু’টি ব্রিজের ক্ষতিগ্রস্থের আশঙ্কায় মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে দেখা যায়, রহিমপুর ইউনিয়নের মৃত্তিঙ্গা স্টিল ব্রিজের সন্নিকটে ধলাই নদীর ঝুকিপূর্ণ বাঁধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে জিও ব্যাগ স্থাপন কার্যক্রম চলছে। এর একই স্থানে নদীর মাঝখান থেকে ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে অন্যপাশে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বিগত প্রায় দুই মাস যাবত ব্রিজের সন্নিকট থেকে বালু উত্তোলন করছেন স্থানীয় এক ইজারা গ্রহীতা। এতে স্টিল ব্রিজ এবং নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে জিও ব্যাগ স্থাপন কার্যক্রম হুমকির মুখে পড়েছে। নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ও দু’টি ব্রিজের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় স্থানীয়রা গত নভেম্বর মাসে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক বরাবরে গণদরখাস্থ দিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রহিমপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর ও রামচন্দ্রপুরে মাত্র দেড় কিলোমিটারের মধ্যে ধলাই নদীর উপর দু’টি স্টিলের ব্রিজ রয়েছে। কয়েক বছর আগে মৃত্তিঙ্গা স্টিল ব্রিজের উত্তর পার্শ্বে প্রায় দুইশত মিটার প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে বন্যার সৃষ্টি হয়। বন্যায় আশপাশ এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। তাছাড়া ধর্মপুর গ্রামে কয়েকটি বসতবাড়িও হুমকির মুখে পড়ে। সম্প্রতি সময়ে ধর্মপুর এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড বালি ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করে। একই সময়ে পাশাপাশি স্থান এবং ব্রিজের সন্নিকট থেকে ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলন করছেন স্থানীয় ইজারাদার।
এতে ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ও দু’টি ব্রিজ এবং পরিবেশ-প্রতিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে। মাটি ও বালি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ অমান্য করে বালু উত্তোলনের ফলে ধ্বংস করা হচ্ছে দেশের সম্ভাবনাময়ী সম্পদ। বালু মহাল নয় এমন কিছু জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জনজীবনে দেখা দিচ্ছে মারাত্মক হুমকি। তবে বালু উত্তোলনকারী ইজারাদার দাবি করছেন ইজারা নিয়ে বৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে।
অভিযুক্ত বালু মহাল ইজারাদার খোরসেদ আলম বলেন, আমার ইজারার স্থান হচ্ছে ব্রিজের কাছাকাছি ও ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ এলাকায়। তাই ব্রিজ রক্ষা করেই বাধ্য হয়ে এখান থেকে বালু উত্তোলন করছি। মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী মো. খালেদ বিন অলীদ জানান, ব্লকের পাশ থেকে কোনভাবেই বালু উত্তোলন করা যাবে না তবে বিষয়টি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ব্রিজের পাশ থেকে কোন অবস্থাতেই বালু উত্তোলন করা যাবে না।
এ বিষয়ে মৌলভীবাজার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোসা. শাহীনা আক্তার বলেন, বিষয়টি আমি দেখতেছি। ইউএনও কে বলে দিচ্ছি ব্যাবস্থা নেওয়ার জন্য।