মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সিলেটবাসীসহ বিশ্বের সব প্রান্তে অবস্থানরত বাঙালিদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন মানবাধিকার আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন চৌধুরী।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এই শুভেচ্ছা জানান। একইসঙ্গে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা বার্তায় নিজের পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা হারিছ চৌধুরীর স্মৃতিচারণ করে ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন চৌধুরী বলেন, ‘আমার বাবা হারিছ চৌধুরী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ঘোষণা শুনে মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখ সমরে অংশ নিয়েছিলেন। পরে জেড ফোর্সের নেতৃত্বে সিলেট থেকে ঢাকায় ফিরেন। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর বিগত সরকার তাঁকে একজন মুক্তিযোদ্ধার প্রাপ্য সম্মানটুকু থেকেও বঞ্চিত করেছিল। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালানোর পর আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে আমি বাবার সেই সম্মানটুকু আদায় করেছি।’
শহীদদের সম্মানের প্রশ্নে আপসহীন থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকলের প্রতি আমাদের সম্মান দিতে হবে। একাত্তর থেকে চব্বিশ পর্যন্ত দেশের জন্য যত বীর শহীদ হয়েছেন, রক্ত দিয়েছেন—তাঁদের প্রাপ্য সম্মানের প্রশ্নে কোনো আপস হতে পারে না।’
ব্যারিস্টার সামিরা বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর আমাদের মহান বিজয় দিবস, ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন। ১৯৭১ সালে ৯ মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শেষে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন জাতিসত্তা আর লাল-সবুজের পতাকা। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে জনগণের প্রকৃত ক্ষমতায়ন এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে যে নবযাত্রা সূচিত হয়েছে, তা যেকোনো মূল্যে রক্ষার শপথ নেওয়ার দিন আজ।’
জুলাই বিপ্লবের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার যে নতুন সূর্য উদিত হয়েছিল, বিগত বছরগুলোতে তা বারবার স্বৈরাচার আর অপশাসনে ম্লান হয়েছে। তবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা আবারও একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সুযোগ পেয়েছি। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি উন্নত ও সুশাসিত বাংলাদেশের শক্তিশালী ভিত গড়তে যে সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, জনগণের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে আমরা সেই কর্মযজ্ঞের সফল পরিসমাপ্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছি।’
বিজয় দিবসের বার্তায় তিনি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের সকল বীর শহীদদের। তিনি বলেন, ‘শহীদদের আত্মদান আমাদের অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রেরণা ও সাহস যোগায়।’
সবশেষে জাতীয়তাবাদের প্রশ্নে ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন চৌধুরী বলেন, ‘আসুন, বহু কষ্টে অর্জিত স্বাধীনতাকে পূর্ণতা দিতে নতুন প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ, সুখী ও সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তুলি। ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সকলে মিলে হাতে হাত রেখে এগিয়ে যাই শান্তি এবং সমৃদ্ধির পথে।’