সিলেটের সীমান্তঘেঁষা উপজেলা কোম্পানীগঞ্জে মাদক উদ্ধার অভিযানে গিয়ে বেপরোয়া মাদক কারবারিদের সংঘবদ্ধ হামলার শিকার হয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর সদস্যরা। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার উত্তর রনিখাই ইউনিয়নের ট্রলির লাইন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এবং নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে বিজিবি সদস্যরা ৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করেন।
এ ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে ১৬৭ বোতল মদ ও মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল জব্দ করেছে বিজিবি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট ব্যাটালিয়ন (৪৮ বিজিবি)-এর অধীনস্থ কালাইরাগ বিওপির দায়িত্বরত ক্যাম্প কমান্ডার।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, কালাইরাগ বিওপির নায়েক সুবেদার মো. আলমগীরের নেতৃত্বে বিজিবির একটি টহল দল শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে নিয়মিত টহলে বের হয়। টহল চলাকালীন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিজিবি জানতে পারে, ভোররাতের দিকে সীমান্ত পিলার ১২৫৪-এর ৭এস এলাকা দিয়ে মাদকের একটি বড় চালান বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে।
উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে টহল দলটি ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সীমান্তের প্রায় ৯০০ গজ ভেতরে ট্রলির লাইন এলাকায় কৌশলগত অবস্থান নেয়। এ সময় একটি মোটরসাইকেলে করে কয়েকজন মাদক কারবারিকে আসতে দেখে বিজিবি সদস্যরা তাদের ধাওয়া দেন। বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক কারবারিরা মোটরসাইকেল ও মদের চালান ফেলে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে তল্লাশি চালিয়ে ১৬৭ বোতল ভারতীয় মদ ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
মাদক জব্দের কিছুক্ষণ পরেই পালিয়ে যাওয়া মাদক কারবারিরা সংঘবদ্ধ হয়ে ফিরে আসে। প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন মাদক কারবারি দেশীয় অস্ত্র ও ইট-পাটকেল নিয়ে টহলরত বিজিবি সদস্যদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তারা বিজিবি সদস্যদের লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো ইট ছুড়তে থাকে।
এ সময় বিজিবি সদস্যরা নিজেদের জানমাল রক্ষা এবং সরকারি অস্ত্র খোয়া যাওয়া রোধে ৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়েন। গুলির শব্দে আতঙ্কিত হয়ে হামলাকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে কালাইরাগ বিওপির দায়িত্বরত ক্যাম্প কমান্ডার জানান, মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে আমাদের সদস্যরা মাদক কারবারিদের আক্রোশের শিকার হন। চোরাকারবারিরা সংঘবদ্ধ হয়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাধ্য হয়ে ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বিজিবির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং টহল জোরদার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।