সিলেটের জৈন্তাপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. লোকমান আহমদ (১৮) গত ১০ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। পরিবারের অভিযোগ, পৈতৃক বাড়ি কম দামে লিখে না দেওয়ায় আপন চাচা তাকে গুম করেছেন। নিখোঁজ লোকমান জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে এবং সিলেট সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় বাড়ি থেকে বের হয়ে লোকমান আর ফিরে আসেননি। সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজ নিয়েও সন্ধান না পেয়ে ২৪ নভেম্বর জৈন্তাপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর-১০৮০) করেন তার বাবা জাহাঙ্গীর আলম।
ছেলের নিখোঁজের ঘটনায় জাহাঙ্গীর আলম তার বড় ভাই মাওলানা বদরুল আলম আলমগীরের (৫০) বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে বদরুল আলম ২২ লাখ টাকায় তার বসতবাড়িটি কিনে নিতে চাপ দিচ্ছিলেন। তিনি রাজি না হওয়ায় তাকে নানাভাবে হেনস্তা করা হচ্ছিল।
জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করেন, ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর আমি যখন ভাইয়ের কাছে উদ্বেগের কথা জানাই, তখন তিনি রহস্যজনক হাসি দিয়ে বলেন, ‘সে এমনিতেই ফিরে আসবে’। এছাড়া নিখোঁজের পরদিনই তিনি পুনরায় বাড়িটি লিখে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। এতেই আমাদের সন্দেহ ঘনীভূত হয় যে, বাড়ি দখলের উদ্দেশ্যে তিনি আমার ছেলেকে গুম করে আটকে রেখেছেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বদরুল আলম এলাকার প্রভাবশালী এবং ভারতীয় পণ্য চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। পৈতৃক সম্পত্তির সকল কাগজপত্র তিনি নিজের জিম্মায় রেখেছেন। এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জাহাঙ্গীর আলম ও তার তিন ছেলেকে আসামি করে একটি মামলা (নং-১১) দায়ের করেছিলেন বদরুল আলম, যা গত ২৮ অক্টোবর মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় খারিজ করে দেন সিলেটের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
এছাড়া জাহাঙ্গীর আলমের আরেক ছেলে মো. ইয়াছিন পুলিশ সদস্য হিসেবে কর্মরত। তিনি চাচাকে অবৈধ ব্যবসা থেকে সরে আসার অনুরোধ করায় তার চাকরি খাওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয়।
নিখোঁজ ছেলের সন্ধান ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। পুলিশ সুপারের সরাসরি হস্তক্ষেপ ছাড়া আমার ছেলেকে উদ্ধার করা সম্ভব নয়। আমি প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, মোবাইল ট্র্যাকিং ও সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে আমার ছেলেকে দ্রুত উদ্ধার করা হোক।