শান্তিগঞ্জ উপজেলার ৩১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। প্রধান শিক্ষক না থাকায় এসব বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকেরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব ও পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
দীর্ঘদিন প্রধান শিক্ষক শূন্যতায় এসব বিদ্যালয়গুলো অনেকটাই অভিভাবকশূন্য হয়ে পড়েছে। ফলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করতে হলে অতি দ্রুত এ সকল বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদগুলো পূরণ করা দরকার বলে মনে করছেন শিক্ষক ও অভিভাবকবৃন্দ।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৯৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩১টিতে প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য।এছাড়া ৪৮৩ জন সহকারী শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন ৩৬৭ জন। অর্থাৎ ১১৬টি পদ শূন্য। এ শূন্যতার কারণে বিদ্যালয়গুলোতে কর্মরত সহকারী শিক্ষকদের উপর বাড়তি চাপ পড়ছে। তাদের অতিরিক্ত পাঠদানের পাশাপাশি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক শূন্যতার কারণে প্রশাসনিক কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে।
পশ্চিম বীরগাঁওয়ের দুর্বাকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছয়টি অনুমোদিত পদের বিপরীতে আছেন মাত্র একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। একই ইউনিয়নের উমেদনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঁচটি পদের বিপরীতে দায়িত্বে আছেন একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। শিমুলবাঁক ইউনিয়নের রঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছয় জনের স্থলে আছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ দুই জন। এসব বিদ্যালয়ে পাঠদান চালাতে ডেপুটেশনের মাধ্যমে শিক্ষক সংযুক্ত করা হচ্ছে।
রঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুরনজিত কুমার দাস বলেন, প্রধান শিক্ষক না থাকায় বিদ্যালয়ের সব প্রশাসনিক দায়িত্ব একাই সামলাতে হয়। এতে ক্লাস নেওয়ার সময় কমে আসে। পাগলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক নুরে আলম সিদ্দিকী রিচার্ড বলেন, বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক থাকলে শিক্ষার পরিবেশ অনেক বেশি সুশৃঙ্খল থাকে। শিক্ষকরা আন্তরিকভাবে কাজ করেন। প্রধান শিক্ষক না থাকায় ক্লাস পরিচালনা ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম খান বলেন, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক পদে শূন্যতা দীর্ঘদিনের সমস্যা। প্রতি বছর অবসর ও ও বদলির কারণে পদ খালি হয়। নিয়োগ প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ হওয়ায় নতুন শিক্ষক যোগ দিতে দেরি হয়। নতুন নিয়োগ সম্পন্ন হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা বলেন, শিক্ষকসংকট ও নেতৃত্বের ঘাটতি শিক্ষার মানে প্রভাব ফেলছে। আমরা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সঙ্গে নিয়মিত সমন্বয় করছি, যাতে দ্রুত প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদগুলো পূরণ হয়।