কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কলাবাড়ী মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত হলো বার্ষিক এনামী জলসা। দরুদ ও হামদ পাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বয়ানে মুসলমানদের জন্য পৃথিবীর তিনটি মসজিদে সফরের বিশেষ গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।
প্রধান অতিথি হজরত মাওলানা মাসুদুর রহমান খান বলেন, উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেম হযরত ক্বারী তৈয়ব (রহ.)-এর বর্ণনা অনুযায়ী, তিনটি মসজিদ ব্যতীত অন্য কোনো মসজিদে নিয়্যত করে সফর করার বিধান নেই। এই তিনটি মসজিদ হলো—
মসজিদুল হারাম (মক্কা মুকাররমা), যেখানে এক রাকাত নামাজের সওয়াব এক লাখ রাকাতের সমান, মসজিদে নববী (মদিনা মুনাওয়ারা), যেখানে প্রতি রাকাতে ৫০ হাজার রাকাতের সওয়াব পাওয়া যায়, এবং বায়তুল মোকাদ্দাস (জেরুজালেম), যা বর্তমানে ইহুদিদের দখলে থাকলেও ভবিষ্যতে মুসলমানদের নিয়ন্ত্রণে ফিরে আসবে।
তিনি বলেন, এসব ফজিলতের প্রমাণ বিভিন্ন সহীহ হাদিসে পাওয়া যায়। তাই বিত্তবান মুসলমানদের উচিত জীবনে অন্তত একবার এই তিনটি মসজিদ সফর করার নিয়্যত পোষণ করা এবং পরস্পরের জন্য দোয়ার বরকত কামনা করা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন মাদ্রাসার মোহতামিম আলহাজ মুফতি আব্দুল মোছাব্বির এবং পরিচালনা করেন সিনিয়র শিক্ষক হাফেজ ফজল উদ্দিন ও হাফেজ জামাল উদ্দিন।
প্রধান অতিথি অন্য এক প্রসঙ্গে বলেন, হজরত জিবরাইল (আঃ) ও নবী করীম (সঃ)-এর কথোপকথনে দুনিয়ার ঈমানদারদের পুরস্কারের যে বর্ণনা এসেছে, তা পরকালীন জীবনের মহিমা প্রকাশ করে। তিনি বলেন, “ময়দানে মাহশরে ঈমানদাররা আল্লাহর দীদার পাওয়ার আশায় থাকবে, আর আশি হাজার পর্দার অন্তরাল হতে এক সময় মহান আল্লাহ নিজ কুদরতে তাদের পুরস্কৃত করবেন।”
মাওলানা ফজলুর রহমান খান কুরআনের আলোকে বলেন, ইহকালীন মুক্তি ও পরকালীন পুরস্কার অর্জনের জন্য মুসলমান উম্মাহকে শিরকমুক্ত জীবন যাপন করতে হবে।
তিনি বলেন, “আল্লাহর সঙ্গে কোনো কিছুকে শরীক করা মহাপাপ। শিরকমুক্ত জীবনই এবাদত কবুলের প্রথম শর্ত।”
এসময় তিনি সহীহ বুখারির বর্ণনা অনুযায়ী ইসলামের পাঁচ মূল স্তম্ভের (এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, কালেমা, নামাজ, রোযা, হজ ও যাকাত) পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আল্লাহর সান্নিধ্য ও পরকালীন পুরস্কার অর্জনের পথ উন্মুক্ত হবে বলে উল্লেখ করেন।
প্রসঙ্গত, কোম্পানীগঞ্জের অন্যতম প্রাচীন এ দ্বীনি প্রতিষ্ঠান এনামী জলসা ও বাৎসরিক মাহফিলের আয়োজন হয়ে থাকে প্রতি বছর। শনিবার আয়োজিত এনামী জলসায় বিশেষ অতিথি হিসেবে শুভেচ্ছা মূলক বক্তব্য রাখেন সিলেট -৪ এর সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী খাজুর গাছ প্রতীক বিয়ে হজরত মাওলানা এডভোকেট মোহাম্মদ আলী,বিশেষ অতিথির বয়ান পেশ করেন হজরত মাওলানা নুরুল হক নবীগঞ্জী, শায়খুল হাদীস আতাউর রহমান কোম্পানীগঞ্জী।