সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার শিমুলবাঁক ইউনিয়নের নিতাই গাঙ জলমহালে দুর্বৃত্তের দেয়া বিষে জলমহালের কয়েক লক্ষাধিক টাকার মাছ মারা গেছে। এতে অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন জলমহাল লিজ নেওয়া শিমুলবাঁক জনতা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সদস্যরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুরো জলমহাল জুড়ে মরা মাছ ভেসে রয়েছে। একটা দুইটা নয় পুরো জলমহালের মাছ ভেসে যাচ্ছে। চারদিকে তীব্র দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় গ্রামের মানুষজন অসুস্থ বোধ করছেন। সমিতির লোকদের অভিযোগ, রাতে অজ্ঞাতপরিচয় দুর্বৃত্তরা প্রচুর পরিমাণে বিষ প্রয়োগ করেছে যার ফলে জলমহালের প্রায় সব মাছই মরে যাচ্ছে৷ এবং পরিবেশ দূষিত হয়েছে।
মৎস্যজীবী ও স্থানীয়রা জানান, কয়েকদিন ধরে মাছ মরতে শুরু হলে প্রথমে স্বাভাবিক মনে হলেও পরদিন থেকে মাছের মৃত্যু প্রচুর পরিমাণে বাড়তে থাকে। গতকাল থেকে পুরো বিলজুড়ে মৃত মাছ ভেসে আছে। এই দূষিত পরিবেশে ইতোমধ্যে মারা গেছে ২০-২৫টি হাঁস ও একটি গরু। পুরো গ্রাম এখন দুর্গন্ধে ছেয়ে গেছে৷
শিমুলবাঁক জনতা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. সাকির আলী বলেন, আমরা বিলটি লিজ নিয়ে মাছ চাষ করে আমাদের জীবিকা চালাই। একরাতে কেউ বিষ ঢেলে আমাদের বছরের পরিশ্রম শেষ করে দিল। কয়েক লাখ টাকার মাছ নষ্ট হয়েছে এটা আমাদের জন্য বিশাল ক্ষতি। আমরা চাই এর সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হোক।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাছির আলী বলেন, গত বছর থেকেই কোনো না কোনো কুচক্রী মহল নানা উপায়ে আমাদের কাজ বাধাগ্রস্ত করে আসছে। তাই আমাদের সন্দেহ আছে তারা এ কাজে জড়িত থাকতে পারে।
গ্রামের তরুণ আল আমিন তালুকদার বলেন, এটা শুধু সাময়িক ক্ষতি নয়। জলজ জীববৈচিত্র্য নষ্ট এবং মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়েছে। আমরা দাবি করছি দ্রুত ও সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হোক।
শিমুলবাঁক গ্রামবাসীর পক্ষে রেজু মিয়া বলেন, এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা আমাদের এলাকায় কখনোই ঘটেনি৷ বিষয়টা মানতে পারছি না। আমরা চাই দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।
এসময় উপস্থিত ছিলেন মৎস্যজীবী সমিতির সদস্য নুরুল হক, নোয়াজ আলী, জমা আলী, রইছ আলী, গৌছ আলী, একরাম মিয়া, বাদশা করিম, সালেহ আহমদ, মজনু মিয়া, আনফর, মস্তফা, নুর আলী, গুল আহমদ, সৈয়দুর রহমান, এবং গ্রামের মুরব্বী আব্দুল গফফার, ধন মিয়া, মবাছদ আলী, আব্দুল ওয়াহিদ, শাখায়াত হোসেন প্রমুখ। তারা সবাই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং প্রশাসনের প্রতি দ্রুত তদন্ত ও দুষ্কৃতীদের কঠোর বিচারের দাবি জানান।