সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের সাদি খালে চলছে অবৈধভাবে বড়শি ধরার নামে টিকিট বাণিজ্য। কোনো প্রকার সরকারি ইজারা ছাড়াই খাল দখল করে প্রতিদিন শতাধিক শিকারির কাছ থেকে টিকিট বিক্রির মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা আদায় করছে একটি প্রভাবশালী চক্র—এমন অভিযোগ উঠেছে স্থানীয়দের মধ্যে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৮ সাল থেকে সাদি খাল উন্মুক্ত অভয়াশ্রম হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে বিগত সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি সাদিপুর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির নাম ব্যবহার করে খালটি দখলে নিয়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখেন। বর্তমানে একই সমিতির ছত্রছায়ায় আরেকটি প্রভাবশালী চক্র অবৈধভাবে বড়শি ধরার (ফিশিং) নামে টিকিট বিক্রি করে চলেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ চক্রের সঙ্গে সাদিপুর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি সুধাংশু দাস, সাধারণ সম্পাদক রণ দাসসহ সমিতির ছয় সদস্য জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া টিকিট বিক্রির সঙ্গে স্থানীয় ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক কাজী জাওয়াদের নামও যুক্ত হয়েছে। এমনকি বিক্রি হওয়া টিকিটের পেছনে তার নামও লেখা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে কাজী জাওয়াদ বলেন,আমি কোনো মৎস্যজীবী নই। টিকিট বিক্রির সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। মৎস্যজীবি সমিতি যদি টাকা নেয়, সেটা তাদের বিষয়।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি এসটিএম ফখর উদ্দিনও বলেন,আমি বড়শি বায়া যাইও না। এসব বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
সমিতির সভাপতি সুধাংশু দাসও অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,আমরা কোনো টিকিট বিক্রি করি না। কে করছে জানি না।
তবে সাধারণ সম্পাদক রণ দাস বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন,যারা বড়শি বাই, তাদের সুবিধার্থে আমরা ১০০ টাকা করে নেই। লিজের জন্য আবেদন করেছি, এখনো পাস হয়নি। আচ্ছা, ঠিক আছে—এখন থেকে টিকেট বিক্রি বন্ধ করে দেব।
স্থানীয় কয়েকজন বলেন, সরকারি মালিকানাধীন জলাশয় থেকে অনুমতি ছাড়া অর্থ আদায় করা রাজস্ব ফাঁকি ও দখলবাজির শামিল। তাদের মতে, সরকারের অনুমতি ছাড়া কোনো বাণিজ্যিক কার্যক্রম অপরাধ। অথচ খাল দখল করে টাকা তোলা প্রশাসনিক শিথিলতার সুযোগে দুঃসাহসিকভাবে চালানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে সাদিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভারপ্রাপ্ত সহকারী কর্মকর্তা সীতল দত্ত বলেন,এ বছর খালটি ইজারা দেওয়া হয়নি। টিকিট বিক্রির কোনো প্রশ্নই আসে না। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন,খালটি এ বছর ইজারা দেওয়া হয়নি। কেউ যদি অবৈধভাবে টিকিট বিক্রি করে থাকে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।