 
    
    
 
        
        সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার জাদুকাটা নদে 'মব সৃষ্টি করে' অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে নদী ভাঙন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে বলে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিজিবির সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির। আজ বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আশঙ্কা ব্যক্ত করেন।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল জাকারিয়া কাদির বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে জাদুকাটা নদে ইজারাবহির্ভূত এলাকা থেকে কিছু কুচক্রী মহল এবং অসাধু বালু ব্যবসায়ীরা বিপুল পরিমাণ বালু উত্তোলন করছে। এর ফলে নদীর পাড় ব্যাপকভাবে ভাঙনের শিকার হচ্ছে, যা লাউড়েরগড় এলাকায় বিজিবির বিওপিসহ পার্শ্ববর্তী গ্রামের বাসিন্দাদের ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার প্রবল আশঙ্কা তৈরি করেছে।
বিজিবির এই কর্মকর্তা আরও জানান, সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে জাদুকাটা নদে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের চেষ্টা করা হচ্ছে। মূল সমস্যা হলো, ইজারার সীমানা নির্ধারণের পরও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও কুচক্রী মহল দখল করা খাসজমি থেকে বালু উত্তোলনের পরিকল্পনা নেয়। প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার নৌকা নিয়ে ১৫-২০ হাজার শ্রমিক একসঙ্গে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে। বিশেষ করে গভীর রাতে ইজারাবহির্ভূত এলাকায় অবৈধ বালু উত্তোলনের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিজিবি এককভাবে প্রাণপণ চেষ্টা করছে এই অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধ করতে।
বিজিবি জানিয়েছে, জেলা প্রশাসনের সহায়তায় নিয়মিত টাস্কফোর্সের অভিযান চালানো হচ্ছে। সম্প্রতি লাউড়েরগড় বিওপিতে অতিরিক্ত বিজিবি সদস্য ও নৌযান মোতায়েন করা হয়েছে। তবে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের নৌকা ও শ্রমিকের তুলনায় এটি অনেক কম, এবং পরিস্থিতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। তাই সঠিক সময়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।
প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জের সবচেয়ে বড় দুটি বালুমহাল তাহিরপুর উপজেলার জাদুকাটা নদে অবস্থিত। মামলাসংক্রান্ত জটিলতায় গত পাঁচ মাস এই দুটি মহালে বালু উত্তোলন বন্ধ থাকার পর চলতি মাস থেকে আবার বালু উত্তোলন শুরু হয়েছে। কিন্তু শুরুতেই নদের সীমান্তবর্তী লাউড়েরগড় এলাকায় ইজারা সীমানার বাইরে গিয়ে একটি পক্ষ জোর করে বালু উত্তোলন করছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নদের পাড় কেটে বালু উত্তোলনের ফলে আশপাশের গ্রামসহ বিভিন্ন স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে।
এই দুটি বালুমহাল এবার জেলা প্রশাসন থেকে প্রায় ১০৭ কোটি টাকায় ইজারা দেওয়া হয়। কিন্তু মামলাসংক্রান্ত জটিলতায় ইজারাদারদের মহাল বুঝিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি। চলতি মাসে প্রশাসন ইজারাদারদের মহাল দুটি বুঝিয়ে দিলে সেখানে আবার বালু উত্তোলন শুরু হয়।