বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, সরকার আওয়ামী লীগকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ না করলেও দেশের জনগণ ইতোমধ্যে তাদের গণহত্যাকারী দল হিসেবে চিহ্নিত করে নিষিদ্ধ করেছে।
তিনি বলেন, ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জনগণ আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। পৃথিবীর কোথাও গণহত্যাকারী দল দ্বিতীয়বার জনগণের সামনে ফিরে আসতে পারেনি, আওয়ামী লীগও ফিরতে পারবে না।
মঙ্গলবার বিকালে ঢাকা-৫ আসনের ছাত্র প্রতিনিধি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। এসময় তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম কেবল স্থগিত রয়েছে এবং যে কোনো সময় সচল হতে পারে—এমন মন্তব্য জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল।
ড. মাসুদ বলেন, যে আওয়ামী লীগ জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার বুকে গুলি চালিয়ে দুই হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে, ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষকে আহত ও পঙ্গু করেছে, বিগত ১৫ বছরে দেশজুড়ে খুন-গুম, জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে—তাদের কোনোভাবেই রাজনৈতিক দল বলা যায় না। আওয়ামী লীগ হচ্ছে গণহত্যাকারী দল।
সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে ইসলামি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে জনগণকে অধিকার আদায়ের জন্য বারবার রক্ত দিতে হয়েছে। শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার পরিবার জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, হাসিনার ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজের নেতৃত্বে জাতি রাজপথে নেমেছিল। জুলাই আন্দোলনের মুখে তার পতন হয়েছে।
তিনি ছাত্র উপদেষ্টাদের সমালোচনা করে বলেন, তারা বিপ্লবের সময়ে ছাত্র-জনতার পাশে দাঁড়াতে ব্যর্থ হয়েছেন, ফলে উপদেষ্টা পদে থাকার নৈতিকতা হারিয়েছেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি এবং ঢাকা-৫ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত রেখে তাদের পুনর্বাসনের সুযোগ করে দেওয়ার চেষ্টা জনগণ মেনে নেবে না। তিনি দাবি করেন, অবিলম্বে আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিষিদ্ধ করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা-৫ আসনে জামায়াতের নির্বাচন পরিচালক আব্দুস সালাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবক গোলাম মর্তুজা, ইসলামি ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন রুবেল ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের নবনির্বাচিত জিএস মাজহারুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিবির ও জামায়াত নেতৃবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন।