মস্কো থেকে ভিয়েতনামের হ্যানয়ের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া একটি ফ্লাইটে ঘটেছিল এক নাটকীয় পরিস্থিতি। আকাশে কয়েক হাজার ফুট উপরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন ৫০ বছর বয়সী এক যাত্রী। তখন পুরো কেবিনজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। ঠিক সেই মুহূর্তে এগিয়ে আসেন বিমানেরই আরেকজন যাত্রী রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাশকো।
রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি জানিয়েছে, যাত্রার প্রায় তিন ঘণ্টার মাথায় ওই যাত্রীর শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। তিনি উচ্চ রক্তচাপজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন, যা কোনো সময় প্রাণঘাতী অবস্থার দিকে যেতে পারত। এমন পরিস্থিতিতে মিনিটের ব্যবধানেই সিদ্ধান্ত নিতে হতো, না হলে ঝুঁকি বাড়ত বহুগুণে।
ফ্লাইটের কেবিন ক্রুরা যখন পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন, তখন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মুরাশকো নিজের আসন ছেড়ে দ্রুত এগিয়ে যান। পেশায় চিকিৎসক হওয়ায় তিনি জানতেন ঠিক কীভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বিমানে থাকা মেডিকেল কিট ব্যবহার করে প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করেন। রোগীর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন এবং ধীরে ধীরে তার শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক করেন।
ঘটনার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে রাশিয়ার জনপ্রিয় টেলিগ্রাম চ্যানেল শট। সেই ভিডিওতে দেখা যায়, মুরাশকো অসুস্থ যাত্রীর পাশে বসে তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন, হাত ধরে আশ্বস্ত করছেন এবং বারবার চেষ্টা করছেন তাকে সোজা হয়ে বসাতে। কেবিনে উপস্থিত অন্যান্য যাত্রীরাও মন্ত্রীর এই উদ্যোগ দেখে স্বস্তি পান।
শেষ পর্যন্ত মুরাশকোর তৎপরতায় যাত্রী অনেকটাই স্বাভাবিক হন। তিনি কোনো জটিলতা ছাড়াই বাকি ফ্লাইট সম্পন্ন করেন। হ্যানয়ে পৌঁছানোর পর ওই যাত্রীর আর কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন হয়নি, তিনি নিজেই হেঁটে বিমান থেকে নেমে যান।
ঘটনার পর রাশিয়ার গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, একজন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এমন পদক্ষেপ দেশবাসীর আস্থা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আবার অনেকেই বলেছেন, এটি মন্ত্রীর মানবিক নেতৃত্বের বাস্তব উদাহরণ।