শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
আন্তর্জাতিক

সরকার গঠনে জটিলতা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগেই প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মতবিরোধ সুশীলা কার্কীর

নেপালে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পাউডেল ও প্রস্তাবিত প্রধানমন্ত্রী, সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কীর মধ্যে। মূলত সংসদ ভাঙার ক্ষমতা কার হাতে হবে—এই প্রশ্নে দু’জনের মধ্যে মতবিরোধ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী নিয়োগে দেরি হচ্ছে।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) নেপালের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম ‘সেতুপাটি’

রাষ্ট্রপতি পাউডেল ইতিমধ্যেই কার্কীকে প্রধানমন্ত্রী বানানোর আশ্বাস দিলেও শর্ত রেখেছেন যে তিনি নিয়োগের পর মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকেই সংসদ ভাঙা ও নির্বাচন তারিখ ঘোষণা করবেন। এই সিদ্ধান্ত তিনি অনুমোদন দেবেন এবং এজন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদেরও রাজি করিয়েছেন বলে দাবি করেছেন।

রাষ্ট্রপতি আরও জানিয়েছেন, কার্কীকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার দরকার নেই; তিনি সংবিধানের ধারা ৬১ (৪) অনুযায়ী সরাসরি তাকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করবেন। সংবিধান অনুসারে রাষ্ট্রপতির প্রধান দায়িত্বই হলো সংবিধানের পালন ও সংরক্ষণ।

তবে কার্কী রাষ্ট্রপতির প্রস্তাবে রাজি নন। তার শর্ত, ‘আগে রাষ্ট্রপতি সংসদ ভাঙুন, তারপর আমি প্রধানমন্ত্রী হবো।” কিন্তু রাষ্ট্রপতি স্পষ্ট করেছেন যে তিনি একতরফাভাবে সংসদ ভাঙতে পারবেন না—এটি কেবল প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশে বৈধ হয়। নচেৎ আদালত তা বাতিল করতে পারে।’

রাষ্ট্রপতি আরও মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘আমি নিজে সংসদ ভাঙার পক্ষে নই। অতীতে বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারীও প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে সংসদ ভেঙেছিলেন, তখনও আমি বলেছিলাম এভাবে করা ঠিক নয়। আমি আজীবন সংসদের পক্ষে ছিলাম, এর ভাঙনের কলঙ্ক নিতে চাই না।’

এই অনড় অবস্থানের কারণে কার্কী প্রধানমন্ত্রী হতে দেরি হচ্ছে।

কার্কীর সরকারে কী হবে

যদি কার্কী প্রধানমন্ত্রী হন, তার সরকারের মূল কাজ হবে নির্বাচন আয়োজন। পাশাপাশি, ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর  জেনজি প্রজন্মের আন্দোলনের সময়কার ঘটনাগুলো তদন্ত, দুর্নীতি ও নেতাদের সম্পত্তি খতিয়ে দেখা। এসব কাজও করার পরিকল্পনা রয়েছে।

গত রাতেই রাষ্ট্রপতি পাউডেল সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগ্দেল ও সাবেক প্রধান বিচারপতি কার্কীর সঙ্গে বৈঠক করেন। এর আগে তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সাথেও সরাসরি বা টেলিফোনে কথা বলেছেন। শুরুতে দলগুলো সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকেই নতুন প্রধানমন্ত্রী চাইছিল, কিন্তু সেনা ও রাষ্ট্রপতি তা অস্বীকার করায় তারা জেনজি প্রজন্মের প্রতিনিধিকে প্রধানমন্ত্রী করার দাবি তোলে। অবশেষে রাষ্ট্রপতি সুশীলা কার্কীকেই সরাসরি প্রধানমন্ত্রী করার পথে এগিয়েছেন।

এদিকে সেনাপ্রধান সতর্ক করেছেন, ‘অধিকার (ক্ষমতা) ছাড়া দীর্ঘদিন সেনা রাস্তায় রাখা সম্ভব নয়, দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’ বর্তমানে সেনাবাহিনীর কমান্ডেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

উল্লেখ্য, দুর্নীতি তদন্ত ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধসহ একাধিক দাবিতে জেনজি প্রজন্মের আন্দোলনের মুখে কেপি শর্মা ওলি পদত্যাগে বাধ্য হন গত ৯ সেপ্টেম্বর।

এই সম্পর্কিত আরো