রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনকে সতর্ক করে বলেছেন, যুদ্ধ শেষ করার দুটি পথ খোলা আছে—আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা অথবা সামরিক শক্তির প্রয়োগ। তিনি বলেছেন, তিনি আলোচনাকেই অগ্রাধিকার দিতে চান, তবে প্রয়োজনে যুদ্ধক্ষেত্রে শক্তি দিয়ে সব লক্ষ্য পূরণ করবেন।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) চীনের তিয়ানজিনে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সম্মেলন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সামরিক কুচকাওয়াজ শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন পুতিন। সফরে রাশিয়া ও চীনের মধ্যে নতুন গ্যাস পাইপলাইনের চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে।
পুতিন বলেন, ‘আমার মনে হয় একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব। বিশেষ করে আমরা দেখতে পাচ্ছি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন বর্তমান মার্কিন প্রশাসনের আন্তরিক চেষ্টা রয়েছে একটি সমাধান খুঁজে বের করার। আমি এক ধরনের আলোর রেখা দেখতে পাচ্ছি। তবে পরিস্থিতি কেমন এগোয়, তা সময়ই বলবে।’
তিনি আরও যোগ করেন, যদি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান না হয়, তবে আমাদের সব লক্ষ্য সামরিক শক্তি দিয়েই অর্জন করতে হবে।
রুশ প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট করে বলেন, ন্যাটোতে যোগদানের পরিকল্পনা থেকে ইউক্রেনকে সরে আসতে হবে এবং কিয়েভে রুশ ভাষাভাষীদের প্রতি বৈষম্য বন্ধ করতে হবে—এসব দীর্ঘদিনের দাবিতে তিনি ছাড় দিতে রাজি নন।
পুতিন জানান, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি মস্কোয় এলে তিনি আলোচনায় বসতে প্রস্তুত আছেন, তবে সেটি হতে হবে সুনির্দিষ্ট প্রস্তুতি ও বাস্তব ফলাফল নিশ্চিত করার মতো বৈঠক।
অন্যদিকে, ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মস্কোকে বৈঠকের স্থান হিসেবে প্রস্তাব দেওয়াকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
জেলেনস্কি বারবার পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, যদিও দুই দেশের অবস্থান এখনও অনেক দূরে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানিয়েছেন—যদি রাশিয়া সমঝোতায় না আসে, তবে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও দুই নেতার বৈঠক চেয়েছেন এবং রাশিয়ার ওপর গৌণ নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছেন, যদিও এখনো তা কার্যকর করেননি।
অর্থনৈতিকভাবে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় বিপর্যস্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, কূটনৈতিকভাবে শান্তিপূর্ণ উপায়ে যুদ্ধ শেষ করাই তার অগ্রাধিকার।
উল্লেখ্য, রাশিয়া ইতিমধ্যে ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল দখল করে একতরফাভাবে সংযুক্তির ঘোষণা দিয়েছে। কিয়েভ ও পশ্চিমা বিশ্ব এটিকে বেআইনি ও ঔপনিবেশিক ধাঁচের আগ্রাসন হিসেবে নিন্দা জানিয়ে আসছে।
তথ্য সূত্রঃ জিও নিউজ।