শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫
শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
আন্তর্জাতিক

দুই সপ্তাহে ৯০০ ভূমিকম্প, আতঙ্কে মানুষ

জাপানের দক্ষিণাঞ্চলের প্রত্যন্ত ও জনবিরল তোকারা দ্বীপপুঞ্জে গত দুই সপ্তাহে ৯০০-রও বেশি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ধারাবাহিক এই ভূকম্পন পুরো দ্বীপপুঞ্জজুড়ে চরম উদ্বেগ ও আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। বাসিন্দারা বলছেন, রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে—ভূমিকম্প যে কোনো সময়ে আঘাত হানতে পারে এমন আশঙ্কায় তারা সব সময় সতর্ক থাকছেন। খবর বিবিসির। 

জাপানের ভূতাত্ত্বিক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২১ জুন থেকে তোকারার আশপাশের সমুদ্রে ভূকম্পন ‘অত্যন্ত সক্রিয়’ রূপ ধারণ করেছে। বুধবার একটি ৫.৫ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে, যার ফলে দ্বীপগুলো আরও কাঁপতে থাকে।

তবে এখনও পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি এবং সুনামির সতর্কতাও জারি করা হয়নি। তবুও বাসিন্দাদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।

তোকারা দ্বীপ

এক স্থানীয় বাসিন্দা আঞ্চলিক সংবাদমাধ্যম এমবিসিকে বলেন, ঘুমাতে গেলেও ভয় লাগে। সব সময় মনে হয় আবার কাঁপবে। 

তোকারা দ্বীপপুঞ্জের ১২টির মধ্যে মাত্র ৭টিতে মানুষের বসবাস, যার মোট সংখ্যা প্রায় ৭০০ জন। অনেক দ্বীপে নেই কোনো হাসপাতাল বা জরুরি সেবা। নিকটতম চিকিৎসাকেন্দ্র ছয় ঘণ্টার ফেরি দূরত্বে, কাগোশিমা শহরে অবস্থিত।

আকুসেকিজিমার ৫৪ বছর বয়সি বাসিন্দা চিজুকো আরিকাওয়া বলেন, ভূমিকম্পের আগে সমুদ্র থেকে অদ্ভুত গর্জন শোনা যায়, বিশেষ করে রাতে। তখন ভয়ানক অনুভূতি হয়। 

দীর্ঘমেয়াদী কম্পনের ফলে অনেক বাসিন্দা মনস্তাত্ত্বিক চাপের মধ্যে রয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা সমিতির প্রধান ইসামু সাকামতো জানান, ভূমিকম্প নিচ থেকে হঠাৎ করে ধাক্কা দিয়ে শুরু হয়, তারপর পুরো বাড়ি দুলতে থাকে। এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে মনে হয়, মাটি কাঁপছে এমনকি যখন তা কাঁপছে না।

ভূমিকম্পের কারণে কিছু গেস্টহাউজ পর্যটক গ্রহণ বন্ধ করে দিয়েছে, কারণ সেগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হতে পারে বলে জানিয়েছে তোশিমা ভিলেজ কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় প্রশাসন সাংবাদিকদের অতিরিক্ত প্রশ্ন না করতে অনুরোধ জানিয়েছে।

জাপান সরকার এ সপ্তাহেই জনসুরক্ষা নিশ্চিত করতে নতুন বাঁধ নির্মাণ, উঁচু আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি ও জরুরি অবকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। তবে সরকার সতর্ক করে বলেছে—বর্তমান প্রস্তুতি ‘অপর্যাপ্ত’, এবং বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবেলায় আরও অনেক কিছু করার প্রয়োজন রয়েছে।

এই সম্পর্কিত আরো