পৃথিবীতে সবচেয়ে মায়াবী, সুমধুর, সোহাগী ও পবিত্রতম নাম হচ্ছে মা।
মা হচ্ছেন অতুলনীয় আর মায়ের ভালোবাসা হচ্ছে স্বর্গীয় ভালবাসা। আদর আর ভালোবাসায় ভরপুর মা শব্দটি।
পৃথিবীর সকল ভালোবাসা জড়িয়ে রয়েছে মা নামের শব্দের মধ্যে। নিঃস্বার্থ ভালোবাসা আর মহান ত্যাগ খুঁজে পাওয়া যায় মায়ের ভালোবাসায়।
মনি-মুক্তা, হীরা- জহর সবকিছু হার মানায় মায়ের ভালোবাসার কাছে।
প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার সারা বিশ্বে দিনটি পালিত হয় “বিশ্ব মা দিবস হিসেবে।
কবির ভাষায়- “মা কথাটি ছোট্ট অতি কিন্তু যেন ভাই/মায়ের চেয়ে নাম যে মধুর, ত্রিভুবনে নাই।”
গানের সুরে ''মায়ের একধার দুধের দাম কাটিয়া গায়ের চাম /পাপোশ
মানাইলে ও ঋনের শোধ হবে না।"
যুগে যুগে একটি কথা চির সত্যে পরিণত হলো আর সেটি হচ্ছে- পৃথিবীতে সন্তানের কাছে সবচেয়ে আপন, সবচেয়ে প্রিয়, সবচেয়ে দামী যে শব্দ তা হল “মা”।
মাকে ভালোবাসা-শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সারা বিশ্বের পাড়ায় পাড়ায় মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার মাকে গভীর মমতায় স্মরণ করেন কোটি কোটি তাদের সন্তানরা।
দিবসটি এমন একটি বিশেষ দিন, সব মাকে তাদের পরিবার থেকে রাষ্ট্র পর্যন্ত সকল স্তরে সম্মান জানানো হয়।
সন্তান ও মায়ের সম্পর্ক গভীর ও দৃঢ় আর কোনও সম্পর্ক এই পৃথিবীতে নেই।খাঁটি ভালোবাসার মহাসাগর মা শব্দটি। তাঁর ভালোবাসায় নেই কোন বিনিময়। আছে শুধু আদর, স্নেহ আর মমতায় ভরপুর।
জগতে মায়ের মতো এতো আপনজন, এতো নিরাপদ স্থান, এতো নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, এতো ত্যাগ আর কেউ দিতে পারে না। তিনি বেহেশত, তিনি স্বর্গীয় ভালোবাসা। তাঁর স্নেহ মমতা অফুরান, তিনি অসীম মমতাময়ী, তাঁর বিশাল মাতৃত্ববোধের জন্য আমরা তাঁর পেটে স্থান পেয়ে মহান আল্লাহর দয়ায় জন্মগ্রহন করি। এজন্য তিনি জননী, গর্ভধারিণী। সন্তানের জন্য তাঁর মহান ত্যাগের কোন উপমা নেই।
তাই প্রতি বছর এই দিনটি স্মরণ করিয়ে দেয় প্রিয় মমতাময়ী মায়ের মর্যাদার কথা। মাকে ভালোবাসা আর তার প্রতি হৃদয় নিংড়ানো শ্রদ্ধার বিষয়টি পবিত্র কোরআনে অত্যধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, মা দিবসের উৎপত্তি যুক্তরাষ্ট্র থেকে। সেখানে প্রতি বছরের মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার পালিত হয় এ দিবসটি। যুক্তরাষ্ট্রের আনা জারভিস নামের এক নারী মায়েদের অনুপ্রাণিত করার মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে স্বাস্থ্য সচেতন করে তুলতে উদ্যোগী হয়েছিলেন।
১৯০৫ সালে আনা জারভিস মারা গেলে, তার মেয়ে আনা মারিয়া রিভস জারভিস মায়ের ত্যাগ, আর ভালোবাসাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য সচেষ্ট হন। ওই বছরই তিনি তার সানডে স্কুলে প্রথম এ দিনটিকে মা দিবস হিসেবে পালন করেন।
১৯০৭ সালের এক রবিবার আনা মারিয়া স্কুলের বক্তব্যে মায়ের জন্য একটি দিবসের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন। এরপর ১৯১৪ সালের ৮ মে মার্কিন কংগ্রেস মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারকে মা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এভাবেই শুরু হয় মা দিবসের যাত্রা।
এরই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি মা দিবস এখন বাংলাদেশসহ অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, রাশিয়া ও জার্মানসহ শতাধিক দেশে মর্যাদার সঙ্গে পালিত হচ্ছে।
১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন এ দিনটাকে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করেন। এরপর থেকে প্রতি বছরের মে মাসের দ্বিতীয় রোববার বেশিরভাগ জায়গায় মা দিবস পালিত হয়ে আসছে।
আজ রবিবার মা দিবস। মা দিবসে মায়ের জন্য কিছু না কিছু করতে চান আমাদের দেশের সন্তানরাও। মাকে উপহার দেওয়ার পাশাপাশি মায়ের সঙ্গে একান্তে কিছু সময় কাটিয়ে ভালোবাসার প্রকাশ করেন সকলে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মা ও সন্তানের ভালবাসাময় ছবি ও স্মৃতিচারণে ভরে গেছে।