সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫
সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
শান্তিগঞ্জে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতার উপদেষ্টার গাড়ি আটকে বিক্ষোভ - যুবদল নেতা জাহিদ বহিস্কার, ছাত্রদল নেতা আজির শোকজ ভুয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পরিচয়ে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে জকিগঞ্জের রাজন গ্রেপ্তার মানুষ বলছে, সব দলের শাসন দেখা হয়েছে, বাকি শুধু ইসলামি শাসন দেখার: গোলাম পরওয়ার এবার সিলেটে দুজনের শরীরে করোনা শনাক্ত, একজন আইসিইউতে তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৪,৫৭০ কোটি টাকা নির্বাচনের আগে দেশে ফিরবেন তারেক রহমান: আবদুল আউয়াল মিন্টু বিএনপির সঙ্গে চীনের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের বৈঠক জাফলংয়ে দুই উপদেষ্টাকে আটকে শ্রমিক বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া যুবদল নেতা বহিস্কার জামালগঞ্জে গজারিয়া ফুটবল টুর্নামেন্টে ফাইনালে বিজয়ী হটামারা
advertisement
অপরাধ

দেড় কোটি টাকার আত্মসাতের অভিযোগ

ইউনুছ আলীতে ‘জিম্মি’ জনস্বাস্থ্যের গোয়াইনঘাট কার্যালয়

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ইউনুছ আলী ব্যাপক দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি আর অনিয়মের কারণে গোয়াইনঘাট কার্যালয় জিম্মি হয়ে পড়েছে। পতিত আওয়ামী লীগ সরকার থাকাকালীন প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদের লোক পরিচয় দিয়ে ইউনুছ আলী কোন প্রকার নিয়মনীতি ও আইনের তোয়াক্কা না করেই খেয়াল খুশিমত নিজের পছন্দের কতিপয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিয়েছেন। কাজ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে তার নিজের ও আত্মীয় স্বজনের প্রতিষ্ঠান। তাছাড়া মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ঠিকাদার নির্বাচনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। যে কারণে গোয়াইনঘাট জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রায় দুই কোটি টাকা নয়ছয় হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছেন। পতিত আওয়ামী লীগকে সহযোগিতাকারী এই কর্মকর্তা এখনো আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও কতিপয় সাংবাদিকদের ক্যাডার হিসেবে ব্যবহার করারও অভিযোগ রয়েছে।


তবে সম্প্রতি ইউনুছ আলীর বিরুদ্ধে শুধু মাত্র ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে গোয়াইনঘাট উপজেলায় ১৩৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওয়াস ব্লক প্রকল্পে কোনো তদারকি না করে কমিশন বাণিজ্যের মাধ্যমে ১৩৬টি ওয়াস ব্লক হতে ১ লাখ টাকা করে প্রায় ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গোয়াইনঘাট উপজেলায় শুধু মাত্র ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে  ১৩৬ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওয়াস ব্লক প্রকল্প বাস্তবায়নে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে গুণধর উপ সহকারি প্রকৌশলী ইউনুস আলীর বিরুদ্ধে। প্রতিটি একতলা বিশিষ্ট ওয়াস ব্লকের নির্মান ব্যায় ১৫ লাখ এবং দ্বিতীয় তলা বিশিষ্ট ওয়াস ব্লকের নির্মান ব্যায় ২০ লাখ টাকা প্রায়। আর এসব ওয়াস ব্লকের কাজ পায় নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঠিকাদার ফারুক আহমদ ও ইউনুছ আলীর মনোনীতরা।

শুধু তাই নয়, নলকূপ স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়নেও নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। জনস্বাস্থ্য অফিসের কর্মকর্তারা সরাসরি অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের অনুগত স্থানীয় ঠিকাদারের প্রতিনিধি, পতিত আওয়ামী লীগের নেতা এবং এলাকাভিত্তিক বেশ কয়েকজনের মাধ্যমে সিন্ডিকেট গড়ে তুলে এমন দুর্নীতি করছেন প্রকৌশলী ইউনুছ।

অভিযোগ রয়েছে, জামানত হিসেবে ৭ হাজার টাকা লাগার কথা থাকলেও জনস্বাস্থ্যের সরকারি নলকূপ পেতে সুবিধাভোগীদের দিতে হয়েছে ৪০ হাজার  থেকে ৫০ হাজার টাকা। নির্দিষ্ট দালাল চক্রের মাধ্যমে সিন্ডিকেট করে এই টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন এই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা।

প্রকৌশলী ইনুছের অফিসের রয়েছে একটি সিন্ডিকেট। যাদের কাজ বিভিন্ন স্থান থেকে টাকা আদায় ও কমিশন বাণিজ্য করা। তারা হলো মেকানিক ছোট ইউনুস , নলকূপ মেকানিক দেলওয়ার হোসেন, নিরাপত্তা প্রহরী জয়নুল ইসলাম, ম্যাশন সফিকসহ আরও কয়েকজন। কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সিন্ডিকেট করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন  নির্দিষ্ট দালাল চক্রের মাধ্যমে এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।

জনস্বার্থ উপেক্ষা করে বড় অংকের টাকার বিনিময়ে সুবিধাভোগীদের তালিকা করেন এই সিন্ডিকেট। বছরের পর বছর বিভিন্ন প্রকল্প থেকে এভাবে হাতিয়ে নেওয়া টাকায় তাঁরা গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। তাঁদের জন্য গোয়াইনঘাট জনস্বাস্থ্যের কার্যালয় যেন হয়ে উঠেছে টাকা কামানোর মেশিন।

সম্প্রতি তালিকায় নাম থাকা সুবিধাভোগীদের সঙ্গে কথা বলে ও সরেজমিনে ঘুরে এসব অনিয়ম-দুর্নীতির সত্যতা পাওয়া গেছে। নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের সুবিধাভোগী গোয়াইনঘাটের তোয়াকুল ইউনিয়নের বীরকুলী গ্রামের এলাই বক্সের ছেলে আজির উদ্দিন জানান, দীর্ঘদিন থেকে ডিপটিউবওয়েল স্থাপন করতে পারেননি, পরে এলাকার এক দালালের মাধ্যমে গোয়াইনঘাট উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসের মেকানিক ইউনুসকে ৫০ হাজার টাকা দেন। এতে টাকা দেওয়ার এক সপ্তাহ পর থেকে ডিপটিউবওয়েল স্থাপন শুরু হয়ে যায়।

গোয়াইনঘাট উপজেলা মডেল স্কুলের একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ৬ মাস পূর্বে উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসে ডিপটিউবওয়েলের জন্য আবেদন করেছেন কিন্তু এখন পর্যন্ত টিউবওয়েল পান নি।

একই উপজেলার সিটিংবাড়ি গ্রামের ফারুক আহমদ জানান, আমি গত বছর ডিপ টিউবওয়েলের জন্য আবেদন করেছিলাম এখন পর্যন্ত পাইনি।


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে সারা দেশের মতো গোয়াইনঘাট  উপজেলায় প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০টি নলকূপ স্থাপনের কাজ শুরু করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। এসব টিউবওয়েল বসানোর কাজ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে তার নিজের ভাই পরিচয়দানকারী রাসেদুল ইসলাম ও আত্মীয় স্বজনের প্রতিষ্ঠান।

কিন্তু গোয়াইনঘাটে নলকূপ বসানোর জামানতের নাম করে চিহ্নিত দালাল চক্রের মাধ্যমে অতিরিক্ত ৩ থেকে ৫ গুণ টাকা আদায় করা হয়েছে। উপ সহকারী প্রকৌশলীর যোগসাজশে অফিসের পিয়ন, মেকানিক, অনুগত কিছু লোকের মাধ্যমে সিন্ডিকেট করে অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে অনিয়ম করছেন তাঁরা। অভিযোগ উঠেছে, এই এক প্রকল্পেই অফিসের যোগসাজশে অর্ধকোটিরও বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।

জানা গেছে, নলকূপগুলো স্থাপনের কাজ পায় প্রকৌশলী ইউনুসের ভাই পরিচয়দানকারী ঠিকাদার রাশেদুল ইসলাম। প্রতিষ্ঠান দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী প্রতিটি নলকূপ স্থাপনের পর শুষ্ক মৌসুমেও যেন পানির অভাব না হয় সে জন্য সাবমার্সিবল মোটর স্থাপনের কথা ছিল। পাকা উঁচু জায়গা তৈরি করে তার ওপর পানির ট্যাংক বসানো এবং নিচে পাকা প্ল্যাটফর্ম নির্মাণের কথা ছিল।

কয়েকজন সুবিধাভোগী জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের কম ক্ষমতাসম্পন্ন মোটর স্থাপন করেছে। বৈদ্যুতিক সার্কিট ব্রেকার দেওয়া হয়নি। কোথাও আবার সুইচসহ অত্যন্ত নিম্নমানের সরঞ্জামাদি দেওয়া হয়েছে। নলকূপের পানির প্ল্যাটফর্ম, ট্যাংক বসানোর জন্য উঁচু চেম্বার নির্মাণের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের ইট। কারও কারও আবার প্ল্যাটফর্ম নির্মাণই করা হয়নি। বর্তমানে দেশের সব সেক্টরে দূর্নীতির মাত্রা কমতে শুরু করলেও গোয়াইনঘাট জন স্বাস্থ্য অফিস চলছে আগের কায়দায়। নানারকম দুর্নীতি -অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও নিম্নমানের কাজের মধ্যদিয়ে প্রকল্পের শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া এ ডিভিলের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানান গোয়াইনঘাটবাসী।

এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ইউনুছ আলীর বক্তব্য নেয়ার জন্যে চেষ্টা করেও তার মুটোফোনে সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।


তাছাড়া হোয়াটসঅ্যাপ ক্ষুদে বার্তা পাঠালে ও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রতন কুমার অধিকারী বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই,  দুর্নীতি যেই করুক প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে জানতে পেরেছি , আমরা তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেব।

এই সম্পর্কিত আরো

শান্তিগঞ্জে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতার

উপদেষ্টার গাড়ি আটকে বিক্ষোভ যুবদল নেতা জাহিদ বহিস্কার, ছাত্রদল নেতা আজির শোকজ

ভুয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পরিচয়ে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে জকিগঞ্জের রাজন গ্রেপ্তার

মানুষ বলছে, সব দলের শাসন দেখা হয়েছে, বাকি শুধু ইসলামি শাসন দেখার: গোলাম পরওয়ার

এবার সিলেটে দুজনের শরীরে করোনা শনাক্ত, একজন আইসিইউতে

তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৪,৫৭০ কোটি টাকা

নির্বাচনের আগে দেশে ফিরবেন তারেক রহমান: আবদুল আউয়াল মিন্টু

বিএনপির সঙ্গে চীনের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের বৈঠক

জাফলংয়ে দুই উপদেষ্টাকে আটকে শ্রমিক বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া যুবদল নেতা বহিস্কার

জামালগঞ্জে গজারিয়া ফুটবল টুর্নামেন্টে ফাইনালে বিজয়ী হটামারা