বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
সারাদেশ

কনকনে শীত ও ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত জনজীবন, চরম দুর্ভোগে চরাঞ্চলের মানুষ

কনকনে শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে লালমনিরহাটের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ভোর নামতেই জেলা সদরসহ সদর উপজেলার পাঁচটি উপজেলায় কুয়াশার ঘনত্ব বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। রাস্তা, মাঠ ও বসতবাড়ি ঢেকে যাচ্ছে সাদা কুয়াশার চাদরে। উত্তরের হিমেল হাওয়ায় শীত এখানে শুধুই একটি ঋতু নয়, বরং সাধারণ মানুষের জন্য টিকে থাকার কঠিন এক লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে।

সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন নদীতীরবর্তী চরাঞ্চল ও খোলা প্রান্তরের বাসিন্দারা। টিনের চালাঘর, ফাঁকা দেয়াল ও কয়েক টুকরো পুরোনো কাপড়ই তাদের শীত নিবারণের একমাত্র সম্বল। গভীর রাতে কুয়াশা শিশিরের মতো নয়, বরং বৃষ্টির মতো ঝরে পড়ছে, যার ফলে ঘরবাড়ি ও কাপড়চোপড় ভিজে যাচ্ছে এবং ঠান্ডার তীব্রতা বেড়ে যাচ্ছে।

কুড়িগ্রাম আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, বুধবার সকাল ৬টায় লালমনিরহাটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা শতভাগ এবং বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ৮.৫ কিলোমিটার। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী কয়েক দিনে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।

সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলায় সকাল থেকেই কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা মারাত্মকভাবে কমে গেছে। দিনের বেলাতেও যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে ভোরে কাজে বের হওয়া দিনমজুর, কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের ভোগান্তি বেড়ে গেছে।

আদিতমারী রেলওয়ে স্টেশন এলাকার অটোরিকশা চালক ছকমল হক (৩৮) বলেন, সকাল হইলেই শরীর নড়ে না। তবু গাড়ি নিয়ে বের হতে হয়। কাজ না করলে খাওন জুটে না।

নদীতীরবর্তী চরাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ আরও প্রকট। আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের গোবর্ধন বাহাদুরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আফজাল হোসেন বলেন, এতো ঠান্ডায় হাত-পা শক্ত হয়ে যায়। রাতে ঠিকমতো ঘুম হয় না। নদীতীরবর্তী মানুষ বড় কষ্টে আছে। আমরা চাই, এলাকার শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো হোক।

শীতের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে নানা রোগবালাই। জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অনেকে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হচ্ছেন। তবে দরিদ্র পরিবারের অনেকেরই প্রয়োজনীয় ওষুধ কেনার সামর্থ্য নেই।

আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু বিশেষজ্ঞ ও সার্জন ডা. আজমল হক বলেন, শীতকালে শিশু ও বয়স্কদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। ঠান্ডা এড়িয়ে চলা এবং অসুস্থ হলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া জরুরি।

এই সম্পর্কিত আরো