রবিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৫
রবিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
সারাদেশ

৯ মাস পর সেন্ট মার্টিন পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত, যাত্রীর অভাবে ছাড়েনি জাহাজ

দীর্ঘ ৯ মাস পর দেশের একমাত্র প্রবালসমৃদ্ধ দ্বীপ কক্সবাজারের সেন্ট মার্টিন পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু আজ শনিবার প্রথম দিনে দ্বীপটি ভ্রমণে পর্যটকদের মধ্যে আগ্রহ দেখা যায়নি। যাত্রীর অভাবে কক্সবাজার থেকে আজ কোনো জাহাজও ছাড়েনি।

আজ দুপুরে নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, সেন্ট মার্টিনগামী কোনো জাহাজ নোঙর করেনি। মহেশখালীর পথে যাত্রী নিয়ে কেবল একটি টাগশিপ ছেড়েছে। কিন্তু সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে কোনো যাত্রী দেখা যায়নি।

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক আবিদ হাসান আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘সেন্ট মার্টিন যাব ভেবেছিলাম, কিন্তু জাহাজ না চলায় যাওয়া হয়নি। দিনে গিয়ে দিনে ফেরার শর্তটা খুবই কঠিন বলে মনে হলো।’

ঢাকার সাভার থেকে আসা পর্যটক শহীদুল ইসলাম বলেন, পরিবেশের সুরক্ষা জরুরি। তবে অন্তত নভেম্বর থেকেই রাতযাপনের সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল। কারণ, সেন্ট মার্টিনে ভ্রমণের আনন্দই আলাদা।

পর্যটন-সংশ্লিষ্টদের ধারণা, সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের জন্য দিনে গিয়ে দিনে ফেরার বাধ্যবাধকতা থাকায় নভেম্বরে পর্যটকদের আগ্রহ তেমন দেখা যাবে না।

গত বছর দ্বীপের পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় পর্যটন নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এর অংশ হিসেবে সেন্ট মার্টিনে ভ্রমণে ১২টি নির্দেশনা আরোপ করা হয়। সবচেয়ে বড় শর্ত—রাত যাপন করা যাবে না, দিনে গিয়ে দিনে ফিরতে হবে। এই কারণেই পর্যটকদের আগ্রহ কমে গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

তাঁরা জানান, মিয়ানমারের রাখাইনে সংঘাতের কারণে ২০২৩ সাল থেকে টেকনাফের দমদমিয়া ঘাট থেকে জাহাজ চলাচল বন্ধ। পরে ইনানী নৌবাহিনীর জেটিঘাট হয়ে জাহাজ চলাচল করলেও গত বছর থেকে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট দিয়েই সাগরপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলছিল।

সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশে’র সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই ঘাট দিয়ে চলতি বছরও জাহাজ চলাচলের অনুমতি আছে। কিন্তু যাওয়া-আসায় প্রায় ১৪ ঘণ্টা সময় লাগে। রাতযাপনের সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। ফলে নভেম্বর মাসে জাহাজ চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি বলেন, ‘আমরা ডিসেম্বর ও জানুয়ারির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিআইডব্লিউটিএ পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযানকে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াতের অনুমতি দিতে পারবে না। টিকিট ক্রয় করতে হবে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের অনুমোদিত ওয়েব পোর্টাল থেকে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকবে; কিউআর কোড ছাড়া টিকিট নকল হিসেবে বিবেচিত হবে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মান্নান বলেন, নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট দিয়েই সেন্ট মার্টিনে জাহাজ চলাচলের অনুমতি আছে। পর্যটকদের নিরাপদ ও শৃঙ্খল ভ্রমণ নিশ্চিত করতে ১২টি নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই সম্পর্কিত আরো