ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে প্রশাসন ভোট চুরি করেছে বলে অভিযোগ করেছে ছাত্রদল। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটের দিকে টিএসসি থেকে বের করা মিছিলে প্রশাসনের বিরুদ্ধে ভোট চুরির অভিযোগ তুলে স্লোগান দেয় তারা।
মিছিলে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা ‘ভোট চোর, ভোট চোর, প্রশাসন ভোট চোর’, ‘রাজাকারের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘ভোট চুরির টালবাহানা, চলেবে না, চলবে না’, ‘ভোট চোরদের আস্তানা, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’ বলে স্লোগান দেন।
মিছিলটি টিএসসি থেকে শুরু করে ভিসি চত্বরের দিকে অগ্রসর হয়।
এর আগে ছাত্রদল মনোনীত ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আজ সারাদিনে আমরা ১২টি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছি। সবকিছু মিলিয়ে বলতে চাই যে নির্বাচন থেকে আমরা একটি গণতান্ত্রিক চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রত্যাশা করেছিলাম, সেটি প্রশাসনের ব্যর্থতায় বারবার ব্যাহত হয়েছে। আমাদের প্রার্থীদের প্রতি অবমাননাকর আচরণও করা হয়েছে। রোকেয়া হলে একজন প্রার্থীকে ছাত্রত্ব বাতিল করার হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। এসব কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো ধৈর্য ধারণ করছি। তবে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে চাই- যদি ভোট গণনাকে প্রভাবিত করা হয়, যদি শিক্ষার্থীদের মতপ্রকাশের অধিকার দমন করার অপচেষ্টা হয়, তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে এর প্রতিবাদ করবে এবং প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।’
ডাকসু নির্বাচনের এ ভিপি প্রার্থী বলেন, ‘আমরা বারবার প্রমাণ পেয়েছি যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে। আজকের নির্বাচনে একাধিক অনিয়ম আমরা প্রত্যক্ষ করেছি।রোকেয়া হল এবং অমর একুশে হলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন যে তাদের দেওয়া ব্যালটে আগে থেকেই নির্দিষ্ট প্রার্থীর পক্ষে ভোটচিহ্ন দেওয়া ছিল।চিফ রিটার্নিং অফিসারের অনুমতিতে তদন্তে গিয়ে আমরা নিজেরাই এ ধরনের ব্যালট দেখতে পেয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘কিছু হলে বহিরাগত ব্যক্তিদের উপস্থিতিও আমরা লক্ষ্য করেছি, যাদের অনেকেই জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিয়েছেন। এসব ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। মনে রাখতে হবে, ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থীরা তাদের কেন্দ্র পরিদর্শনের সুযোগ পেয়েছিলেন, অথচ এবার আমাদের সেই সুযোগ নষ্ট করা হয়েছে। বিজয় ৭১ হলের শেষ এক ঘণ্টায় হঠাৎ করে ১০০ ভোট গণনা হয়েছে, অথচ উপস্থিত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন সেখানে এত ভোটার আসেননি। এর ফলে ভোটের ফলে প্রভাব পড়বে বলে আমরা মনে করি।’
সংবাদ সম্মেলনে আবিদুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করছি নীলক্ষেত, কাটাবন, চাঁনখারপুলসহ আশপাশের এলাকায় দেশব্যাপী জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছে। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, রাষ্ট্রীয় প্রশাসন এবং নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি অতি দ্রুত এই সন্ত্রাসী অবস্থান থেকে ক্যাম্পাস এবং আশপাশের এলাকা মুক্ত করুন।’