মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
অর্থ-বাণিজ্য

পোশাক শিল্পের নতুন চ্যালেঞ্জ ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ: বিজিএমইএ সভাপতি

ইসরায়েল ও ইরান যুদ্ধ পোশাক শিল্পের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন বিজিএমইএ’র নতুন সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু।

তিনি বলেন, ইসরায়েল ও ইরানের যুদ্ধ আমাদের জন্যে নতুন চ্যালেঞ্জ। তেলের দাম বৃদ্ধি পেলে তার প্রভাব সবার ওপর পড়বে। পোশাক শিল্পও এর প্রভাব থেকে বাদ যাবে না। এই অবস্থায় প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখতে আমাদের অনেকগুলো কাজ করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি সকলের সহযোগিতায় এই কাজগুলো করতে আমরা সক্ষম হবো।

সোমবার রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে বিজিএমইএর নবনির্বাচিত কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ’র প্রশাসক আনোয়ার হোসেন বিজিএমইএ’র নতুন সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু’র হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।

অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতিদের মধ্যে বক্তব্য দেন রফিকুল ইসলাম, ফারুক হাসান, সভাপতি রুবানা হক, এস এম ফজলুল হক, কাজী মনিরুজ্জামান ও আনিসুর রহমান সিনহা। অনুষ্ঠানে নবনির্বাচিত কমিটির ৩৫ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সম্মিলিত পরিষদের পক্ষ থেকে ফোরাম থেকে নির্বাচিত বিজিএমইএ’র নতুন সভাপতিকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়। 
বিজিএমইএ’র নতুন সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, ‘আমরা এমন একটি সময়ে দায়িত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছি, যখন আমাদের প্রিয় শিল্পটি বিভিন্ন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা পালটা শুল্ক, ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল, উচ্চ ব্যাংক সুদ, মুদ্রাস্ফীতি, দুর্বল অবকাঠামো ব্যবস্থা, মজুরি বৃদ্ধি এবং জ্বালানি সংকটে আমরা অনেকটা নিষ্পেষিত অবস্থায় আছি। এর মধ্য আবার নতুন করে শুরু হয়েছে ইসরায়েল ও ইরান যুদ্ধ। নির্বাচনের সময় মিডিয়ার বন্ধুরা প্রশ্ন করতেন, আপনাদের সামনে চ্যালেঞ্জ কি। আমরা বলেছিলাম, চ্যালেঞ্জ প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হয়। ইসরায়েল ও ইরানের যুদ্ধ আমাদের জন্যে নতুন চ্যালেঞ্জ। তেলের দাম বৃদ্ধি পেলে তার প্রভাব সবার ওপর পড়বে। পোশাক শিল্পও এর প্রভাব থেকে বাদ যাবে না। এই অবস্থায় প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখতে আমাদের অনেকগুলো কাজ করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি সকলের সহযোগিতায় এই কাজগুলো করতে আমরা সক্ষম হবো।

নতুন এই সভাপতি বলেন, ‘নির্বাচনের সময় আমরা অনেকগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। আমাদের অনেক কাজ করতে হবে। পোশাক শিল্পের জন্যে স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় গঠন করার জন্য কাজ করা। এসএমই ও নন বন্ডেন্ড পোশাক কারখানাকে বাড়তি সুবিধা দেওয়া। কাস্টমস ও ভ্যাট নিয়ে কাজ করবো। এলডিসি উত্তরণের প্রভাব নিয়ে আমরা অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করবো, যেন সঠিক সময়ে এলডিসি উত্তরণ ঘটে। মার্কিন শুল্ক নিয়ে কাজ চলছে। এটি যাতে সহনীয় পর্যায়ে থাকে, পারষ্পরিক শুল্ক যেন আমাদের ওপর আরোপ না হয় সেটি নিয়ে কাজ করবো। এক্সিট পলিসি নিয়ে কাজ করবো, আমরা প্রকৃত এক্সিট পলিসি তৈরি করতে চাই। এর বাইরেও আমাদের অনেকগুলো প্রতিশ্রতি রয়েছে।’

মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, ‘নতুন বোর্ডের অন্যতম এজেন্ডা হচ্ছে একটি কার্যকর ও জবাবদিহিতামূলক বিজিএমইএ গড়ে তোলা। বিজিএমইএ যাতে একটি সার্ভিস ওরিয়েন্টেড প্রতিষ্ঠান হিসাবে কাজ করে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। এই বোর্ড একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু করবে; যেখানে আবেদন, অভিযোগ ও তথ্য জমা দেওয়া যাবে। আমরা সব সময় বলি কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস কমাতে হবে এবং আমরা বারবার সরকারের কাছে আবেদন করি। বিজিএমইএ’র সদস্যদের যাবতীয় সার্ভিস চার্জ পহেলা জুলাই থেকে ২৫ শতাংশ কমানো হবে।’

তিনি বলেন, ‘দেশের পোশাক শিল্পকে বর্হিবিশ্বে আমরা আরও উজ্জ্বল করতে চাই। নির্বাচনের আগে আমরা ফোরাম, সম্মিলিত পরিষদ বা ঐক্য পরিষদ ছিলাম। নির্বাচনের পর আমরা এখন সবাই বিজিএমইএ পরিবার। এখান আর ফোরাম নেই, সম্মিলিত পরিষদ নেই, সবাই পোশাক শিল্প পরিবার। আমরা সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে চাই।’

অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ প্রশাসক বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান আয়োজনের। ভবিষ্যতে বিজিএমইএ ও দেশের পোশাক শিল্প আরও উজ্জ্বল হবে সেটিই আমার প্রত্যাশা। আমি এখানে এসেছিলাম একজন সরকারি চাকরিজীবী হিসাবে, আর এখন দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে আমি ফিরছি আপনাদের সহযাত্রী হিসাবে।’

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন কমিটি দেশের পোশাক শিল্পকে এগিয়ে নেবে। সেটিই আমার প্রত্যাশা।’

বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, এই সেক্টরের জন্যে আমরা একসঙ্গে কাজ করব। এ ছাড়া বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান ও সাবেক সভাপতি আনিসুর রহমান সিনহার বক্তব্যেও একই সুর উঠে আসে।

এই সম্পর্কিত আরো