২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ থাকলেও রাজস্ব সংস্থা ছাড়া অন্য রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো প্রশ্ন তুলতে পারবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।
আজ মঙ্গলবার বেলা ৩টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘ফ্ল্যাট বা জমি কিনলে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ কর দিলে এনবিআর প্রশ্ন করত না, সেটাকে আমরা রেশনালাইজড করেছি। যাঁরা নিজের জমিতে বাড়ি করবেন, বিদেশ থেকে হয়তো টাকা আয় করেছেন, ঠিকভাবে এনেছেন, কিন্তু ফরমাল চ্যানেলে আসেনি। নানা কারণে আমাদের এখানে অপ্রদর্শিত অর্থ থেকে যায়। সেখানে যদি কেউ কেনেন, তাঁদের যাতে একটি এক্সিট রুল থাকে, সে জন্য আমরা বলেছি, ট্যাক্স দিয়ে এই আয় ঘোষণা দিলে ট্যাক্স অথরিটি (এনবিআর) মেনে নেবে। এর মানে এই নয় যে অন্য কেউ প্রশ্ন করতে পারবে না। অন্য অথরিটি প্রশ্ন করতে পারবে। এই টাকাও দ্বিগুণ করেছি, আগে যা ট্যাক্স ছিল, তার দ্বিগুণ দিতে হবে।’
ঢালাওভাবে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ পরিহার করা হয়েছে উল্লেখ করে আবদুর রহমান খান বলেন, ‘১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ ছিল। সেটা আগস্টে আপনি (অর্থ উপদেষ্টাকে ইঙ্গিত করে) আসার পরই বাতিল করেছি। এরপর আরেকটা কালোটাকার প্রবিধান ছিল, সেটা ৩০ জুন এক্সপায়ার করেছে, সেটা আর বাড়ানো হয়নি।’
এনবিআর চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘আরেকটা বিধান ছিল, কেউ যদি জমি, বাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনেন, তাহলে একটু বেশি কর দিলে এনবিআর বা অন্য কোনো সংস্থা প্রশ্ন করবে না। এটাও আমরা বাড়াইনি।’ তিনি বলেন, ‘ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে সেটা পাঁচ গুণ করে দিয়েছি। এটা কস্টলি হয়েছে।’
অর্থ উপদেষ্টার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এটা নিয়ে যেহেতু কথা হচ্ছে, আপনারা চাইলে এটা বিবেচনা করতে পারেন।
এনবিআর চেয়ারম্যানের ব্যাখ্যা দেওয়ার আগে কালোটাকা সাদা করার বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, কালোটাকার সঙ্গে ক্লজ আছে। ট্যাক্স দিতে হবে পাঁচ গুণ বেশি। তিনি বলেন, ‘কালোটাকা নয়, ফ্ল্যাটের বিষয়ে বিধান রাখা হয়েছে। নৈতিক দিক ও ট্যাক্স পাব কি না, সেটি বিবেচনায় নয়, নিজের জমিতে কেউ... করতে চাইলে সুযোগ রাখা হয়েছে। আমরা বলছি না, খুব ভালো কিছু করেছি। আমরা দেখব।’
সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ, অর্থসচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদারসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবেরা উপস্থিত ছিলেন।